দুইদিন আগেও কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধী শিবসেনার সঙ্গে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দিয়েছিলেন। আর এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারও সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে জনরায় মেনে বিরোধীদলের আসনে বসবেন বলে প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু নানা নাটকীয়তার পর ৩০ বছরের জোটসঙ্গী বিজেপিকে ছেড়ে কংগ্রেস-এনসিপিকে নিয়েই ক্ষমতায় যাচ্ছে শিবসেনা।
নির্বাচনের আগে ভারতের এই রাজ্যটিতে বিজেপি নিরঙ্কুশ জয় পাবে বলে অনেকেই ধারণা করেছিলেন। এমনকি বেশ কয়েকটি জরিপও তাই বলেছিল। কিন্তু ২৪ অক্টোবর নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দেখা যায় বিজেপি-শিবসেনা জোট গত নির্বাচনের চেয়েও খারাপ ফল করেছে। ২৮৮ আসনের বিধানসভায় বিজেপি পায় ১০৫ আসন, শিবসেনা ৫৬, এনসিপি ৫৪ এবং কংগ্রেস জেতে ৪৪টি আসন। সরকার গঠন করতে প্রয়োজন ১৪৫টি আসন।
শিবসেনাকে নিয়ে অনায়াসেই সরকার গঠন করে ফেলতে পারতো বিজেপি। কিন্তু ৫০:৫০ ফর্মুলার কথা বলে আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদ চেয়ে বসে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। কিন্তু বিজেপি তা মানতে নারাজ। আর এ নিয়ে শেষ পর্যন্ত তাদের জোট ভেঙে যায়।
সরকার গঠনের জন্য রাজ্যপাল ভগৎ সিং কিশোরীর আমন্ত্রণ পেয়েও প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন না থাকার কথা বলে সেই আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দেয় বিজেপি। এরপরই শিবসেনাকে সরকার গঠনের জন্য বলা হয়। মূলত এরপর থেকেই কংগ্রেস ও এনসিপির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে শিবসেনা। এক সময়ের এই দুই শত্রুই এখন বন্ধু হয়ে সরকার গঠনে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
এরই মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে কথা বলেছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। তারা তাদের অতীতের দলের মতপার্থক্য মুছে ফেলতে চান বলে জানিয়েছেন দুই প্রধান।
শরদ পাওয়ারের শর্ত অনুযায়ী এদিন নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন শিবসেনার একমাত্র মন্ত্রী অরবিন্দ সাওয়ান্ত। এরপরই সরকার গঠন নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়।
মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় গত শুক্রবার পদত্যাগ করেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ।
বিজেপির পক্ষ থেকে এরই মধ্যে শিবসেনার নেতৃত্বে নতুন সরকারকে শুভেচ্ছা জানিয়ে রেখে বলেছে, ‘যদি শিবসেনা মানুষের রায়কে অপমান করতে চায়, এবং এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে সরকার গড়তে চায়, তাদের জন্য শুভ কামনা রইল।’