চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

অবশেষে অপেক্ষার অবসান

করোনাভাইরাস মহামারিতে সবচেয়ে কাঙ্খিত জিনিস হচ্ছে ভ্যাকসিন। বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে, যার কয়েকটি নানা চ্যানেলে দেশে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। আবার ভ্যাকসিন আসা নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা শঙ্কাও। তবে আশার কথা হচ্ছে অবশেষে শঙ্কা দূর হয়ে দেশে আসছে ভ্যাকসিন।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার তৈরি করোনা ভ্যাকসিন চলতি মাসে ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে যেকোনো দিন ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে বাংলাদেশে আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম।

এরআগে ভারতের দেয়া ঘোষণায় ভ্যাকসিন বন্ধের খবর শঙ্কা তৈরি করেছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যেহেতু বর্তমানে দেশের অন্যতম দায়িত্বশীল সংস্থা করোনাভাইরাস ও ভ্যাকসিন বিষয়ে, সেহেতু মহাপরিচালকের এই ঘোষণা সকল অনিশ্চিয়তা দূর করেছে বলে আমাদের ধারণা।

মহাপরিচালকের ঘোষণা অনুসারে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার তৈরি করোনা ভ্যাকসিন বিষয়ক বাংলাদেশের ডিস্ট্রিবিউশন সংস্থা বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ২দিন তাদের ওয়ারহাউজে ভ্যাকসিন সংরক্ষণে রাখবে। পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তেরর দেয়া তালিকামত কেন্দ্রে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেবে প্রতিষ্ঠানটি। প্রথম মাসে ৫০ লাখ এবং পরের মাসে আরো ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসলে ওই ৫০ লাখ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে।

প্রথম দিকে ভ্যাকসিন পাবেন অনুমোদিত স্বাস্থ্যকর্মী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাষ্ট্র পরিচালনায় অধিনস্ত কর্মকর্তা, কর্মচারী, সম্মুখসারির গণমাধ্যমকর্মী, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পৌরসভার প্রতিনিধি ও কর্মচারী, মৃতদেহ সৎকারে নিয়োজিত, জরুরি পানি-গ্যাস, বিদ্যুৎ পরিবহন কর্মী, বিমানবন্দরে নিয়োজিত কর্মচারী, প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিক। এছাড়াও জেলা-উপজেলা জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মচারী, ব্যাংক কর্তকর্তা-কর্মচারীও পাবে। দ্বিতীয় ধাপে বয়স্ক জনগোষ্ঠী, ৮০ বছরের ওপরে যারা তারা পাবেন, এরপর ৭৭-৭৯ বয়স্করা, এধাপে জাতীয় দলের খেলোয়াড়, যারা বিদেশে যাচ্ছেন তারাও পাবেন। এভাবে হিসাব করে ৫০ লাখ প্রথম রাউন্ডে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। দ্বিতীয় রাউন্ড শেষে ৭০ বছরের উর্ধ্বে যারা ভ্যাকসিন পাবেন। তৃতীয় ও চতুর্থ মাসে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ভ্যাকসিন প্রাপ্তরা দ্বিতীয় ডোজ পাবেন। পঞ্চম মাসে ধর্মীয় প্রতিনিধি, ৬৪ বছরের সকল জনগোষ্ঠী ভ্যাকসিন পাবেন।

মোটা দাগে কিছু শ্রেণি-পেশার মানুষের ক্যাটেগরি উল্লেখ করলেও তাদের মধ্যে থেকে কারা আগে বা কারা পরে পাবে, সে বিষয়ে কোনো পরিষ্কার নির্দেশনা ও প্রক্রিয়া এখনও চোখে পড়ছে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় তালিকা করা হয়েছে। সেসব অনুসরণ করে দেশে একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা সময়ের দাবি।

সরকারি ঘোষণা অনুসারে ভ্যাকসিন পরিবহন সংরক্ষণ ও প্রদানের সময় যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সার্বিক কাজ করবে। তারপরেও কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা এড়াতে সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীকেও নিযুক্ত করা যেতে পারে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা সুপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত নিলে খুব শীঘ্রই দেশ থেকে করোনা দূর হবে বলে আমাদের আশাবাদ।