ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত ভাস্কর্য ‘অপরাজেয় বাংলা’র ভাস্কর এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাস্কর্য ও চিত্রশিল্পী সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ গুরুতর অসুস্থ। বর্তমানে তিনি রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
আবদুল্লাহ খালিদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তিনি ফুসফুস সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরেই ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন তিনি।
সিলেটটুডে২৪.কম জানিয়েছে, এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে নিজ শহর সিলেটে একটি সম্মাননা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় একটি হাসপাতালে আবদুল্লাহ খালিদকে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে গত সোমবার রাতে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় এবং পরদিন ভোরে রাজধানীর সেন্ট্রাল হসপিটালে ভর্তি করা হয়।
সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ বাংলাদেশের একজন স্বনামখ্যাত ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী। অপরাজেয় বাংলা ছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে অঙ্কুর, অঙ্গীকার, ডলফিন, এবং মা ও শিশু।
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন্দ্রের সামনে অবস্থিত ম্যুরাল ‘আবহমান বাংলা’ এবং ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান দপ্তরের সামনে অবস্থিত টেরাকোটার ভাস্কর্যও নির্মাণ করেন এই গুণী ভাস্কর।
শিল্পকলা ও ভাস্কর্যে গৌরবজনক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১৪ সালে শিল্পকলা পদক এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক-এ ভূষিত হন।
আব্দুল্লাহ খালিদ সিলেট জেলা শহরে জন্মের পর ১৯৬৯ সালে তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড ক্রাফ্টস (বর্তমান চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে চিত্রাঙ্কন বিষয়ে স্নাতক এবং পরে ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিত্রাঙ্কন ও ভাস্কর্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাস্কর্য বিভাগে শিক্ষকতা দিয়ে আব্দুল্লাহ খালিদ তার কর্মজীবন শুরু করেন।
১৯৭২ সালে সেখানকার প্রভাষক থাকাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর উদ্যোগে কলা ভবনের সামনে নির্মিতব্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মারক অপরাজেয় বাংলার নির্মাণের দায়িত্ব পান। তিনি ১৯৭৩ সালে ভাস্কর্যটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৯৭৯ সালে ১৬ ডিসেম্বর নির্মাণ কাজ শেষ করার পর স্থাপনাটির উদ্বোধন করা হয়।