কেমন লাগবে? রাশিয়া বিশ্বকাপে যদি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বা লিওনেল মেসিকে না দেখতে পাওয়া যায়। বা দু’জনকেই? বিশ্বকাপটা কি একইরকম থাকবে?
মেসি–রোনালদোকে ছাড়া বিশ্বকাপ! এই সময়ে সেটি আবার হয় নাকি! ফুটবলপ্রেমীরা হায়-হায় করে উঠবেন শুনলেই। আরে তাদের দেখতেই তো মুখিয়ে থাকবে ফুটবল বিশ্ব। রাশিয়ায় দু’জনেই সম্ভবত শেষবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে নামবেন। জীবনের শেষ বিশ্বকাপে কি তাদের জ্বলে উঠতে দেখা যাবে না? যাবে, যদি…!
এই যদির ক্ষেত্রে প্রশ্ন অনেক, কিন্তু উত্তর একটাই। একটা দিন, একটা ম্যাচ। আর তাতেই নির্ধারিত হয়ে যাবে এ মুহূর্তে বিশ্বের সেরা দুই মহাতারকার ভাগ্য। মঙ্গলবার গভীর রাতে সুইজারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে পর্তুগাল। বুধবার ভোরে আর্জেন্টিনা নামবে ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে।
দু’জনেই নিজ নিজ দেশের অধিনায়ক। দলের অন্যতম তারকা, ভরসাও বটে। ফলে দলকে বিশ্বকাপের টিকিট দেওয়া দায়িত্বটা তাদের তুলে নিতে হবে নিজেদের কাঁধেই। দু’জনের মনে থাকবে একটাই মন্ত্র— জয়। একটা অঘটন, একটা ভুল মানেই বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন শেষ। তাই কে সেরা, এই দ্বন্দ্ব ভুলে ফুটবলপ্রেমীরা চাইবেন, যেকোনো মূল্যেই হোক জিতুক আর্জেন্টিনা-পর্তুগাল।
দু’জনের মধ্যে কিছুটা হলেও সুবিধাজনক স্থানে রয়েছে রোনালদোর পর্তুগাল। নিজেদের গ্রুপে দ্বিতীয় স্থানে থাকায়, না জিতলেও অন্তত প্লে–অফ খেলার সুযোগ পাবে তারা। জিতলে সরাসরি বিশ্বকাপে যাবে।
কিন্তু আর্জেন্টিনাকে যেকোনো মূল্যে জিততেই হবে। তা হলে অন্তত প্লে–অফের স্থানটা নিশ্চিত হবে, আবার অন্যদের জয়-পরাজয়ে সরাসরি বিশ্বকাপের ভাগ্যও খুলতে পারে। আর হারলে বা ড্র করলে, একেবারেই নির্ভর করে থাকতে হবে বাকিদের উপর।
শুধু তা–ই নয়, পরিস্থিতিও ‘আলবিসেলেস্তা’দের প্রতিকূলে। একে তো খেলতে হবে অ্যাওয়ে ম্যাচে, তাও আবার সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯,১২৭ ফুট উঁচুতে। ২০০১’র পর থেকে যেখানে জেতেনি আর্জেন্টিনা। এই সময়ে হেরেছে দু’বার। ইতিহাস এবং সাফল্য দুই জায়গাতেই ইকুয়েডরের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে আর্জেন্টিনা। তবে একটি জায়গায় গেলে আর্জেন্টাইনরা যেন খেলতে ভুলে যায়। তার নাম কিটো। অথচ ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, এখানেই বিশ্বকাপে খেলার শেষ লড়াইটিতে মাঠে নামতে হচ্ছে মেসিদের। ভূপৃষ্ঠ থেকে এত উপরে খেলাটা বরাবরই অস্বস্তিকর। কিন্তু ইতিহাসের দেয়ালও একদিন ভাঙে। বিশ্বকাপ খেলতে হলে অভেদ্য দেয়াল যে ভাঙতেই হবে মেসিদের।
কিছুদিন আগেই বলিভিয়ার লা পাজে খেলতে গিয়ে অক্সিজেন মাস্ক পরতে হয়েছিল ব্রাজিলের ফুটবলারদের। আর্জেন্টিনা তো সেখানে গিয়ে হেরেও এসেছে। ফলে লড়াই মোটেই সহজ নয়। এই পরিস্থিতিতে মরণ-বাঁচন ম্যাচে আর্জেন্টিনার বাকি ফুটবলারদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন উরুগুয়ের কোচ অস্কার তাবারেজ। তিনি অবশ্য নির্ভার, তার দল যে এদিন ড্র করলেই পৌঁছে যাবে বিশ্বকাপে।
একই দিনে নামছে ব্রাজিল এবং চিলি। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচ চিলির কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, ব্রাজিলের কাছে নিয়মরক্ষার। তাই ফুরফুরে নেইমার এবং দানি আলভেজ দেখা করেছেন কিংবদন্তি রোনাল্ডো নাজারিওর সঙ্গে। একসঙ্গে ছবি তুলতেও দেখা গেছে তাদের।