বাংলা ছোট পর্দার সুপারস্টার বলা হয় তাকে। এই সময়ে তার বাজার দরও চড়া মূল্যের। অগনিত কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। অথচ এতো এতো কাজ করেও নাকি তৃপ্ত নন মোশাররফ করিম! হ্যাঁ। এমনটাই জানালেন ছোট ও বড় পর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেতা।
দেশে টিভি নাটকের ঐতিহ্য এখন কি সোনালী অতীত?-এমন জিজ্ঞাসাকে সামনে রেখে শুক্রবার বিকেলে ‘অভিনয় শিল্পী সংঘ’ আয়োজন করে ‘পেশাদারিত্বের সংকটে দেশের টেলিভিশন নাটক ও অভিনয় শিল্প’ নামের একটি মুক্ত আলোচনা। যেখানে নিজের আলোচনায় পেশাদারিত্ব মনোভাব ও ছোট পর্দায় কাজের মান নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করেন মোশাররফ করিম।
বর্তমানে দেশের টিভি নাটকের পটভূমিত ছোট হয়ে আসছে, গল্পের চরিত্র কমে যাচ্ছে। শত শত অভিনয় শিল্পী কর্মহীন হয়ে পড়ছে এবং দর্শক প্রিয়তা হারাচ্ছে টিভি নাটক। এর উত্তরণের উপায় খুঁজতে শুক্রবার বিকালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় এক সেমিনারের। যেখানে উপস্থিত ছিলেন অভিনয় শিল্প সংঘের সভাপতি ও অভিনেতা শহীদুল আলম সাচ্চু, সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব নাসিম, হিল্লোল,আজাদ আবুল কালাম, চয়নিকা চৌধুরী,
সুইটি, চিত্রলেখা গুহ, মোহন খান, তানিয়া আহমেদ, সুমন আনোয়ারউর্মিলা শ্রাবন্তী কর, জাকিয়া বারী মম, শামিমা তুষ্টি, রওনক হাসান,আহমেদ রুবেল, মাজনুন মিজান, বৃন্দাবন দাস, এস এ হক অলিক, সনি রহমান, কে এস ফিরোজ, মৌটুসি বিশ্বাস, লুতফুর রহমান জর্জ, এজাজ মুন্না, মোস্তফা মনন, সাজিন হাসান বাবু সহ অনেক নাট্যকার, নির্মাতা, শিল্পী।
প্রবীন অভিনেতা ও নাট্য নির্মাতাদের মধ্যে ছিলেন মামুনুর রশিদ,ড. এনামুল হক, আবুল হায়াত,দিলারা জামান, মাসুম আজিজ, আফরোজা বানুসহ অনেকে।
কীভাবে নাটকের পেশাদারিত্ব সংকট দূর করা যায় সেটা নিয়ে আলোচনার আয়োজন করে অভিনয় শিল্পী সংঘ। এর সাথে নাট্যকার সংঘ, ডিরেক্টর গিল্ড, প্রডিউসারস এসোসিয়েশন একাত্মতা প্রকাশ করে তারাও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে দশটি বিষয়ের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
আর সেখানেই মোশাররফ করিম নাটকের গুণগত মান পরিবর্তনের কথা তুলে ধরেন। জানান, এখন প্রচুর কাজ করলেও তিনি তৃপ্ত নন। প্রচুর কাজ করে টাকা রোজগার ঠিকই করছি, কিন্তু গুণগত কাজ খুব একটা হচ্ছে না। টাকা রোজগারটা যদি ভালো প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে করা যায় তাহলেই মানসিক তৃপ্তিটাও আসবে বলে মনে করেন এই অভিনেতা।
আর গুণগত মান তখনই পরিবর্তন হবে যখন নাটক নির্মাণে বাজেট বাড়বে। নাটকের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে তাদের যথাযথ সম্মানী দিলে কাজের মানের পরিবর্তন হবে বলেও বিশ্বাস করেন এই অভিনেতা।
এদিকে পেশাদারি মনোভাব নিয়ে কথা বলেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। বাংলা নাটকে সংকট দূরীকরণে চঞ্চল মনে করেন, যার যার সংকট তাকেই দেখতে হবে একত্রিত হয়ে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে নিজেদের কাজটি করতে হবে। ফাঁক ফোকরের ভেতর দিয়ে অন্যভাবে হাত মিলিয়ে যার যার সুবিধা আদায় করলাম, তাহলে আমাদের অভিনয় শিল্পী সংঘ বাঁচবে না এবং আমাদের শিল্পীও বাঁচবে না। একত্র হতে পারলেই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব।