ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ আসাম (উলফা) নেতা অনুপ চেটিয়া ১৯৬৭ সালে আসামের তিনসুকিয়া জেলার জেরি গায় জন্মগ্রহণ করেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। তার নামগুলোর মধ্যে সুনীল বড়ুয়া, ভাউজান এবং আহমেদ উল্লেখযোগ্য। আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষিত উলফার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অনুপ চেটিয়া।
বিভিন্ন সূত্র জানানয়, অনুপের পরিবারের সদস্যরা ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকার বসবাস শুরু করেন। গ্রেফতারের আগে ১৯৯৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ঢাকায় তার পরিবারের সদস্যরা শ্যামলীর একটি ছয়তলা ভবনে ভাড়া থাকতেন। তখন জন ডেভিড সোলায়মান নাম নিয়ে অনুপ সেখানকার একটি বেসরকারি সংগঠনে (এনজিও) নির্বাহী হিসেবে কাজ করছিলেন।
গ্রেফতারের পর তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান এবং অবৈধভাবে বিদেশী মুদ্রা ও একটি স্যাটেলাইট ফোন রাখার অভিযোগে তিনটি মামলা হয়। তিন মামলায় কারাভোগের পর ২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি শেষ হয় সাজার মেয়াদ।
তবে তিনি ২০০৩ সালের ২৩ আগস্ট বাংলাদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করলে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। সে অনুযায়ী ভারতে হস্তান্তরের আগে পর্যন্ত বাংলাদেশে নিরাপত্তা হেফাজতে ছিলেন অনুপ চেটিয়া।
অনুপ চেটিয়ার আগে অরবিন্দ রাজখোয়াসহ আরো কয়েকজন উলফা নেতাকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। ২০০৯ সালের শেষদিকে উলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়াকে হস্তান্তর করা হয়।
এরপর ২০১০ সাল থেকে দিল্লীতে ভারত সরকারের সঙ্গে উলফার শান্তি আলোচনা শুরু হলে ভারতে ফিরে যাওয়ার আগ্রহ দেখান অনুপ চেটিয়া। দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতেই তাকে জন্মভূমিতে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
১৯৯২ সাল থেকে বাংলাদেশে গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে পরেশ বড়ুয়া এবং অরবিন্দ রাজখোয়ার পাশাপাশি অনুপ চেটিয়াও অন্যতম প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
পরেশ বড়ুয়া এবং অনুপ চেটিয়া পরস্পরের আত্মীয়। এখনো আত্মগোপনে আছেন পরেশ বড়ুয়া। অনুপ চেটিয়ার স্ত্রী মনিকা বড়ুয়া এবং ছেলে বুমনি আকা জুমন ও মেয়ে বুলবুলিও আত্মগোপনে আছেন বলে ধারণা করা হয়।