বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমশ বাড়তে থাকায় রোগীদের জন্য তরল অক্সিজেনের অভাব দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। ঈদের দিন জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেনের অভাব মেটাতে ১৮০ মেট্রিক টন মেডিক্যাল অক্সিজেন সরবরাহ করে দেশটি। তবে সহযোগিতার নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে গতকাল শনিবার। এদিন প্রথমবারের মতো সেদেশের ‘অক্সিজেন এক্সপ্রেস’ অক্সিজেন নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
আমরা জানি, গত এপ্রিলে করোনাভাইরানসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে বহু রাজ্যে অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়। সেই সংকট মেটাতে ওই মাসের ২৪ তারিখ থেকে ট্রেনে করে তরল অক্সিজেন সরবরাহ শুরু করে ভারতের রেলওয়ে। যার নাম দেওয়া হয় ‘অক্সিজেন এক্সপ্রেস’। চালুর পর ১৫টি রাজ্যে কমপক্ষে ৩৫ হাজার টন তরল অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়।
নিজেদের সংকট মোকাবিলার পর বাংলাদেশের বিপদে সেই ‘অক্সিজেন এক্সপ্রেস’ নিয়ে এগিয়ে আসে ভারত। শনিবার ঝাড়খন্ডের জামশেদপুর টাটানগর থেকে ১০টি কনটেইনারে অক্সিজেন পৌঁছায় সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম স্টেশনে। পরের দিন ভারত থেকে আসা ওই ২০০ টন তরল অক্সিজেন ট্যাংকলরি করে ঢাকায় নিয়ে আসার কাজ শুরু করা হয়।
এটাই শেষ নয়, এভাবে আরও অক্সিজেন বাংলাদেশে সরবরাহ করবে ভারত। এরই মধ্যে দেশটির প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর এক বিবৃতিতে তা নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, ভারতীয় রেলওয়ে বাংলাদেশে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যত বেশি সম্ভব তরল অক্সিজেন সরবরাহের এ চেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
আমরা জানি, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ভারতের। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে- এমন ঝুঁকি থাকার পরও ভারত সেসময় আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহযোগিতায় স্বাধীন দেশ হিসেবে জন্ম হয় বাংলাদেশের। সেই ঋণ কোনোদিনও ভুলবার নয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে ভারত। অকৃত্রিম বন্ধুতত্বের সেই সম্পর্ক নতুন মাত্রা লাভ করেছে।
আমরা মনে করি, আজ ভারত যেভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে, ভবিষ্যতেও এভাবেই পাশে থাকবে। এই বন্ধুত্ব হোক জীবন রক্ষার, বন্ধুত্ব হোক উন্নয়নের।