ক্রিকেটে ‘সিঙ্গেল রান’ বলে একটা ব্যাপার আছে। এই আধুনিক যুগেও বাংলাদেশ সেটি শিখে উঠতে পারছে না। নিধাস ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে ৬ উইকেটের হারের দিন এক-দুই রানে বাংলাদেশের সেই অক্ষমতা দৃষ্টিকটুভাবে ফুটে উঠেছে।
টি-টুয়েন্টি ১২০ বলের খেলা। বাংলাদেশ সেখানে ৫৫টি ডেলিভারিতে কোনো রান নিতে পারেনি! ভাবা যায়?
ইনিংসের একদম প্রথম ওভার থেকে সৌম্য, তামিমের শারীরিক ভাষা দেখে বোঝা গেছে তারা বাউন্ডারি ছাড়া কোনো রানই নেবেন না। যে বলে পুশ, ট্যাব করলে অনায়াস এক বা দুই হয়, সেখানে তারা জোরের ওপর খেলতে গিয়ে ফিল্ডারের হাতে বল দিয়েছেন। প্রথম দশ ওভারে রান ওঠে ৬৯, পরের দশ ওভারে ৭০। এই ১৩৯ করতে ভারতের লাগে ১৮.৪ ওভার।
(বাংলাদেশের ইনিংসের খবর পড়তে এই লিংকে ক্লিক করুন।)
আগের ম্যাচের মতো রোহিত শর্মা দ্রুত ফিরলেও সেই শেখর ধাওয়ান দাঁড়িয়ে যান। অধিনায়ক রোহিত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরেছিলেন। এদিন ১৩ বলে তিন চারে ১৭ করে যান।
ক্যারিয়ারের চতুর্থ টি-টুয়েন্টি খেলতে নামা রিশভ পান্ট এদিনও নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার আগে পথ ধরেন। রুবেল হোসেনের অফস্টাম্পের বাইরের বলে হাফভলি বানিয়ে খেলতে গিয়ে প্লেডঅন হন। আগের ম্যাচে করেছিলেন ২৩। এদিন আট বলে সাত।
সুরেশ রায়নার ইনিংস এদিন তুলনামূলক ‘উন্নত’। লঙ্কানদের বিপক্ষে এক রানের মাথায় ফুলটস বলে বোল্ড হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রুবেলের বলে মিরাজের হাতে সহজ ক্যাচ দেয়ার আগে ধাওয়ানের সঙ্গে ৬৮ রানের জুটি গড়েন। ২৭ বলে এক চার, এক ছয়ে তার সংগ্রহ ২৮।
রুবেল ৩.৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন। একটি করে উইকেট মোস্তাফিজ এবং তাসকিনের। বাকিরা উইকেটহীন। হাত ঘোরানো বাকি পাঁচ বোলার উইকেটহীন।
এমন বোলিংয়ের দিনে ধাওয়ান এতটুকু তাড়াহুড়া করেননি। ৩৫ বলে অর্ধশতক তুলে নেন। আর পাঁচ রান যোগ করে তাসকিনের বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেও কাজের কাজ করে যান।
আগের ম্যাচে ৯০ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে নিয়ে বাংলাদেশের কোনো পরিকল্পনা ছিল বলে মনে হয় না। লঙ্কানদের বিপক্ষে লেগসাইড ব্যবহার করে অধিকাংশ রান তোলেন তিনি। বাংলাদেশের বোলাররাও তার কাছে ওই লেগসাইডে মার খেয়েছেন। অধিনায়ক রিয়াদ এই ওপেনারের বিপক্ষে যে ছক্কাটি হজম করেন, সেটি ওই শর্টবল থেকে। মিডউইকেটের উপর দিয়ে। তাসকিনকে তিনি যে ছয়টি হাঁকান সেটিও লেগসাইড দিয়ে। ফাইনলেগ।
ধাওয়ান চার মারেন মোট পাঁচটি। তার চারটি ওই লেগ সাইড থেকে!
এমন পরিকল্পনাহীন থেকে কিংবা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না করে ম্যাচ জেতা যায় না। বাংলাদেশও জেতেনি। মুশফিকদের পরের ম্যাচ ১০ মার্চ। প্রতিপক্ষ সেই শ্রীলঙ্কা। যারা ঘরে এসে ডুবিয়ে গিয়েছিল।