চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

সবার প্রিয় বাসচালকের শেষ ঠিকানা ‘বাস কফিন’

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা রাজ্যের গ্র্যান্ড মিডোর সেরা বাসচালক হিসেবে সুপরিচিত গ্লেন ডেভিস। এতটাই বিশ্বস্ত যে, টানা ৫৫ বছর ধরে ছোট্ট শহরটির অধিবাসীরা তাদের সন্তানদের স্কুলে আনা-নেয়ার দায়িত্ব তার হাতে ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত থেকেছেন।

ডেভিসও গর্ব করে বলতেন, ১৯৪৯ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত এত বছরের পেশাজীবনে একটি বারের জন্যও বাস চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাননি তিনি। এটি ছিল তার জীবনের দীর্ঘতম পেশা, হয়তো সবচেয়ে পছন্দেরও।

Bkash July

তাই সবার প্রিয় সেই বাসচালকের শেষ আশ্রয় যে কফিন বা ক্যাসকেট, সেটিও যে হবে তার ৫৫ বছরের সঙ্গী স্কুলবাসের মতোই দেখতে, সেটাই যেন স্বাভাবিক।

অবশ্য মৃত্যুর পাঁচ বছর আগেই নিজের এই কফিন দেখতে পেরেছিলেন গ্লেন ডেভিস। স্থানীয় আসবাব নির্মাতা একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক জিম হিন্ডের পক্ষ থেকে এটি ছিল একটি উপহার।

Reneta June

ঠিক স্কুলবাসের মতোই কফিনটির গায়ে রঙ করা হয়েছিল হলুদ। হলুদের ওপর কালো ডোরাকাটা। রঙ দিয়ে বাসের মতো হেডলাইট ও টেইললাইট আঁকা। কফিনের গায়ে বাসের মতোই লেখা ‘গ্র্যান্ড মিডো স্কুলস’। তার সঙ্গে আবার বাসের রেজিস্ট্রেশন নম্বরের পাশাপাশি তার সিরিয়াল নম্বর ‘৩’। ১৯৪৯ সালে ডেভিস প্রথম যে স্কুলবাসটি চালাতেন, তার নম্বরগুলোও বসানো হয়েছে কফিনের গায়ে।

কফিনটি দেখে আনন্দে, আবেগে সেদিন কেঁদে ফেলেছিলেন বাসচালক গ্লেন ডেভিস। ভীষণ পছন্দ হয়েছিল তার নিজের শেষ ঠিকানাটি। সে সময় পোস্ট বুলেটিন পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, কফিনটা তার এতই পছন্দ হয়েছে যে কয়েকবার কেঁদেছেন তিনি।

হিন্ডের উপহার দেয়ার একটা বড় কারণও ছিল। তিনি কৃতজ্ঞ ছিলেন ডেভিসের প্রতি। হিন্ডের ১৮ মাস বয়সী মেয়ের ক্যানসার ধরা পড়েছিল। সেই ভয়াবহ সময়ে ডেভিস তাকে ও তার পরিবারকে পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছিলেন।

একটা সময় জিম হিন্ডের মেয়ে ক্যানসারকে জয় করে সুস্থভাবে বেড়ে ওঠে। আর সেই যন্ত্রণাময় মুহূর্তে পাশে থাকার কৃহজ্ঞতা হিসেবে এই কফিনটি নিজে তৈরি করে ডেভিসকে উপহার দেন তিনি।

ডেভিসের মেয়ে লিসা হজ প্রথমে উপহার হিসেবে কফিন দেখে খুব বিরক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু বাবার উৎসাহ আর আনন্দ তার বিরক্তিকে জয় করে নিয়েছিল।

গ্লেন ডেভিস পাঁচ বছর যত্ন করে রেখে দিয়েছিলেন কফিনটি। মাঝেমাঝে রসিকতা করে বলতেন, কফিনটিতে বাসের মতো সবই আছে, শুধু ইমার্জেন্সি এক্সিট বা জরুরি নির্গমনের কোনো দরজা নেই!

গত মঙ্গলবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের পর সেই ‘বাস কফিনে’ শুইয়েই সমাহিত করা হলো সবার প্রিয় স্কুলবাস চালককে।

Labaid
BSH
Bellow Post-Green View