মানবাধিকার সনদে জেন্ডার বৈচিত্র্য বিবেচনায় ‘ইক্যুইটি’ তথা সমতার ধারণাটি অনুপস্থিত উল্লেখ করে সাত দশক আগে গ্রহণ করা মানবাধিকারের বৈশ্বিক সনদে জেন্ডার বৈচিত্র্য অন্তর্ভূক্তির আহ্বান জানানো হয়েছে।
মানবাধিকার দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষ্যে আর্টিকেল নাইনটিন এর আয়োজনে ‘মানবাধিকার: জেন্ডার সমতায় অগ্রগতি’ শীর্ষক একটি অনলাইন আলোচনা সভা (ওয়েবিনার) অনুষ্ঠিত হয়। ওই ওয়েবিনারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্নিগ্ধা রেজওয়ানা এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন: জেন্ডার বৈচিত্র্য বিবেচনায় মানবাধিকার সনদে ‘ইক্যুইটি’ তথা সমতার ধারণাটি অনুপস্থিত, যা নারী-পুরুষের বাইরে অন্য লিঙ্গের মানুষের জন্য বৈষম্যমূলক। এ বৈষম্য রুখতে সাত দশক আগে গ্রহণ করা মানবাধিকারের বৈশ্বিক সনদে জেন্ডার বৈচিত্র্য অন্তর্ভূক্ত প্রয়োজন।
ওয়েবিনারে জেন্ডার এক্টিভিস্ট, জেন্ডার বৈচিত্র নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞ, ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সাংবাদিক, আইনজীবী নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও অধিকারকর্মীরা এতে অংশ নেন।

আর্টিকেল নাইনটিন বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সলের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারটির আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার সংবাদ পাঠিকা তাসনুভা আনান শিশির এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. স্নিগ্ধা রেজওয়ানা।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা জেন্ডার ও যৌন বৈচিত্র্য, পারিবারিক সহিংসতা, সম্পত্তিতে নারীর অধিকার, আইনী বৈষম্য ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে আলোচনা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।
২০২১ সালের ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে দেশের একটি বেসরকারি চ্যানেল টিভি চ্যানেলে সংবাদ পাঠ শুরু করেন তাসনুভা আনান শিশির।
আলোচনায় তিনি বলেন: ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার তথাকথিত পশ্চিমা সংস্কৃতির কোন বিষয় নয়। ট্রান্সজেন্ডাররাও বাংলাদেশের নাগরিক। আমাদের অধিকার ও মেধার স্বীকৃতি এবং সহযোগিতামূলক পরিবেশ দরকার, করুণা নয়।
আর্টিকেল নাইনটিনের আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন: মানবাধিকারের বর্তমানটি সনদটিতে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। নারী-পুরুষের বাইরে যৌন বৈচিত্র্যের সকল মানুষের অধিকারের কথা এখানে বলা দরকার।
তিনি আরও বলেন: বাংলাদেশে তৃতীয় লিঙ্গ ও যৌন বৈচিত্র্যের অন্য মানুষদের সম্পর্কে অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। সবার কথা বলার জন্য এখন খোলামেলা পরিবেশ তৈরি করা জরুরী।