প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু তার ৭ মার্চের ভাষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছিলেন: বাঙালিদের কেউ দাবায় রাখতে পারবে না। বাংলাদেশকে কেউ যে দাবায় রাখতে পারবে না তা আজ এই অর্জনের মধ্য দিয়েই প্রমাণ হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উত্তরণের ঘোষণায় বঙ্গবন্ধুর এই কথা বারবার মনে পড়ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ উৎসবের সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, রাজনীতি মানে নিজের উন্নয়ন নয়, জনগণের উন্নয়ন করা। আর তার সরকার এই উন্নয়নের রাজনীতিই করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের সময়ই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, আওয়ামী লীগ সরকারের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা হবে গ্রামমুখী। গ্রাম থেকেই সব উন্নয়ন শুরু করতে হবে। দুস্থ জনগণকে এমনভাবে ভাতা দিতে হবে যেন তারা কর্মবিমুখ না হয়। বরং দু’বেলা খেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে পারে।
‘আমাদের পরিকল্পনা অ্যাডহক বেসিসে না, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং আরও দীর্ঘমেয়াদী দশ বছরব্যাপী পরিকল্পনা করে আমরা উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। আর এ কারণেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭.২৮ ভাগে নিতে সক্ষম হয়েছে। ‘আমাদের বাজেট এখন আমরা প্রায় ৯০ ভাগ নিজ দায়িত্বে করতে পারি।’ বাজেট এখন চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ অর্জন আমরা যারা দেশের উন্নয়নের পথে একযোগে কাজ করেছি এবং দেশের উন্নয়নে যারা অবদান রেখেছেন তাদের সবারই অর্জন।’
সরকার শুধু পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের কৃষক-শ্রমিকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের এই অর্জনে অবদান রয়েছে। তারা সবাই দেশের উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এই যাত্রাপথ যেন থেমে না যায়, এই অর্জন যেন হারিয়ে না যায় সেই কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, সরকারের যতটুকু অর্জন, তা এই বাংলার জনগণের জন্য। ‘জনগণের কাছ থেকে যদি সাড়া না পেতাম তাহলে তো এই লক্ষ্য অর্জন করতে পারতাম না।’
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মর্যাদা উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে উত্তরণ হবে বলে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি হয়তো তখন বেঁচে থাকব না। কিন্তু তখন এই দেশের তরুণ সমাজ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে উত্তরণ উৎসব কর্মসূচির সূচনা ঘোষণা করেন।