
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর ২৫ নেতার প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন তিন দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের পর ২৫ জামায়াত নেতার একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
আজ আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।
এর আগে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপূরী ও এই দলের সমাজ কল্যাণ সচিব শাহ মোহাম্মদ আলী হুসাইন এবং ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির ও একই সংগঠনের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য মো. এমদাদুল হক জামায়াতের ২৫ নেতার নির্বাচনে অংশগ্রহণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন।

ওইদিন রাতে এই চার রিটকারি নির্বাচন কমিশনে গিয়ে এই ২৫ জামায়াত নেতার প্রার্থিতা বাতিলের পদক্ষেপ নিতে ইসিতে আবেদন করেন।
সে আবেদনে বলা হয়: ইদানিং বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২৫ জন প্রার্থী তাদের রাজনৈতিক পরিচয় গোপন রেখে অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতীক বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নমিনেশন পেপার জমা দেন। যা নির্বাচন কমিশনে গৃহীতও হয়। তাদেরকে বৈধ প্রর্থী হিসেবে নির্বাচন করার সুযোগ দেয়া হয়েছে, যা আইনগত বৈধ নয়।
ওই আবেদনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওয়েবসাইট থেকে ওই ২৫ জন প্রার্থীর তথ্য-উপাত্ত এবং সে সংক্রান্ত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন দাখিল করে বলা হয়, রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এই ২৫ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার পদক্ষেপ নিতে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে যে ২১ জন জামায়াত নেতা অংশ নিচ্ছেন তারা হলেন:
ঢাকা-১৫ আসনে ডা. শফিকুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে রফিকুল ইসলাম খান, খুলনা-৬ আসনে আবুল কালাম আজাদ, কুমিল্লা-১১ আসনে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, খুলনা-৫ আসনে মিয়া গোলাম পারোয়ার, পাবনা-৩ আনোয়ারুল ইসলাম, পাবনা-৫ আসনে ইকবাল হোসাইন, যশোর-২ আসনে আবু সাঈদ মো. শাহাদাত হোসাইন, ঠাকুরগাঁও-২ আসনে আবদুল হাকিম, দিনাজপুর-১ আসনে আবু হানিফ, দিনাজপুর-৬ আসনে আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-৩ আসনে আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ আসনে মাজেদুর রহমান, সাতক্ষীরা-২ আসনে মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৪ আসনে গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ আসনে শামীম সাঈদী, নীলফামারী-২ আসনে মো. মনিরুজ্জামান, ঝিনাইদহ-৩ মতিয়ার রহমান, বাগেরহাট-৩ আসনে ওয়াদুল শেখ, বাগেরহাট-৪ আসনে আব্দুল আলীম ও চট্টগ্রাম-১৫ আসনে শামসুল ইসলাম।
আর যে ৪ জন জামায়াত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে একাদশ সাংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তারা হলেন:
কক্সাবাজার-২ আসনের হামিদুর রহমান আযাদ, চাাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ নূরুল ইসলাম বুলবুল, চট্টগ্রাম-১৬ জহিরুল ইসলাম ও পাবনা-১ ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান।
এর আগে তরিকত ফেডারেশনের করা এক রিটের পর হাইকোর্ট রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেন।