একদিকে শিরোপার অন্যতম দাবিদার, টুর্নামেন্টে অপরাজিত থেকে নামা ভারত। অন্যদিকে ধুঁকতে ধুঁকতে টানা পাঁচ হারে তলানির আফগানিস্তান। বিপরীতমুখী শক্তির দুদলের লড়াইয়ে কোহলিদের মাত্র ২২৪ রানে আটকে চমকেই দিয়েছিলেন রশিদ-নবিরা। শেষ হাসি অবশ্য ভারতেরই, মোহাম্মদ সামির হ্যাটট্রিকের পর ১১ রানের জয়ে ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়েছে তাদের।
বিশ্বকাপের দুবারের চ্যাম্পিয়নদের যেটি বিশ্ব আসরে ৫০তম জয়। আর দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। ১৯৮৭ আসরে চেতন শর্মা হ্যাটট্রিক করেছিলেন। সেটি ছিল বিশ্বকাপেরই প্রথম হ্যাটট্রিক। ৩২ বছর পর সেখানে আরেক ভারতীয় নাম লেখালেন, এবারের নামটি মোহাম্মদ সামি।
সবমিলিয়ে বিশ্বকাপে এটি দশম হ্যাটট্রিক। চেতন শর্মা, সাকলায়েন মুশতাক, চামিন্ডা ভাস, ব্রেট লি, লাসিথ মালিঙ্গা, কেমার রোচ, স্টিভেন ফিন ও জেপি ডুমিনির পাশে বসলেন সামি। এদের মাঝে মালিঙ্গা দুদিক থেকে ব্যতিক্রম। এই শ্রীলঙ্কান বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক করেছেন দুবার, ২০০৭ ও ২০১১ আসরে, ২০০৭ আসরে তো টানা চার বলে উইকেট নিয়েছিলেন।
সাউদাম্পটনে ধীরগতির পিচে শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেটে ২২৪ রান জমাতে পারে ভারত। কোহলি ৬৭ ও যাদবের ৫২ রানে লড়াইয়ের পুঁজি পায় তারা। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারের এক বল আগে অলআউট হওয়ার সময় ২১৩ রানের বেশি যেতে পারেনি আফগানিস্তান।
শেষ ওভারে দরকার ছির ১৬ রান। সামির ওভারের প্রথম বলে ৪ মেরে শুরু করেন নবি। পরের বলে এক রান নেয়ার সুযোগ থাকলেও নেননি এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তৃতীয় বলে বোলারের মাথার উপর দিয়ে সীমানা ছাড়া করতে গেলে টাইমিং গড়বড় করে পান্ডিয়ার হাতে ধরা পড়েন নবি। আফগানদের স্বপ্ন আসলে চূর্ণ হয় তখনই।
পরের বলে আফতাবকে বোল্ড করে উল্লাস শুরু করেন সামি। তখন হ্যাটট্রিকের সামনে। সেটি করেই থেমেছেন। ম্যাচটা ভারতের পাল্লায় রেখে স্বস্তির সুবাতাস নামানোর ওভারে পঞ্চম বলে মুজিব-উর রহমানকেও বোল্ড করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন এ পেসার।
এই জয়ে ৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকল ভারত। অবশ্য একটি ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে বৃষ্টির কারণে। বাকি চারটিতে জয়। ৯ পয়েন্ট নিয়ে এখন টেবিলের তিনে তারা। আর ৬-এর ৬-ই হেরে দশ দলের তলানিতে আফগানিস্তান।
জবাব দিতে নেমে ছোট ছোট কিছু জুটি গড়েছে আফগানরা। ইনিংস সেভাবে বড় করতে পারেনি কেউ। শেষ ওভারে যেয়ে আউট হওয়া মোহাম্মদ নবির ৫২ রানই সর্বোচ্চ। ৫৫ বলের ইনিংসে ৫ চার ও এক ছক্কার মার তার।
বাকিদের মধ্যে রহমত শাহ ৩৬, অধিনায়ক গুলবাদিন নায়েব ২৭, হাসমাতুল্লাহ শাহিদি ২১, নাজিবুল্লাহ জাদরান ২১ রানের অবদান রেখেছেন।
হ্যাটট্রিক করা সামি ৪০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সেরা।২টি করে উইকেট ভাগ করে দিয়ে তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন বুমরাহ, চাহাল ও হার্দিক। বুমরাহ ও চাহাল তো বেশ কিপ্টেও ছিলেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে আসা ভারত লোকেশ রাহুল ৩০, বিরাট কোহলি ৬৭, বিজয় শঙ্কর ২৯, এমএস ধোনি ২৮ ও কুলদীপ যাদবের ৫২ রানে লড়াইয়ের পুঁজি আনে।
বিজ্ঞাপন