একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রতিথযশা নাট্যকার ও সংস্কৃতিকর্মী নিখিল সেন আর নেই। সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৭ বছর। তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণী নাট্যকার নিখিল সেন-এর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষেরা।
ঘরের মানুষকে হারিয়ে শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ড. সফিউদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন বলেন, কিংবদন্তি এ সাংস্কৃতিক সংগঠকের মৃত্যুতে বরিশাল তথা পুরো বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গণে এক বিশাল শুন্যতার সৃষ্টি হলো। সমাপ্ত হলো এক গৌরবোজ্জ্বল, বৈচিত্র্যপূর্ণ অধ্যায়ের। দীর্ঘ অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে সংস্কৃতি চর্চার ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং আবহমান বাংলার গৌরবময় সংস্কৃতির নানা দিকের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন নিখিল সেন।
তথাকথিত মফস্বল শহরে থেকেও যারা জাতীয় সাংস্কৃতিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন নিখিল সেন তাদের অন্যতম। দক্ষিণবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র বরিশালে থেকে তিনি সারাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। নিখিল সেন ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা নাট্যকার ও সংস্কৃতি কর্মী। তিনি যেমন ছিলেন একাধারে একজন অভিনয় শিল্পী, আবত্তি শিল্পী, তেমনি ছিলেন ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। এক সময় কমিউনিস্ট আন্দোলনের সাথেও যুক্ত ছিলেন নিখিল সেন। আবৃত্তিতে অবদান রাখার জন্য ২০১৫ সালে তিনি শিল্পকলা পদক এবং নাটকে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ ২০১৮ সালে একুশে পদক লাভ করেন নিখিল সেন।
১৯৩১ সালের ১৬ এপ্রিল বরিশালের কলস গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নিখিল সেন। তার পুরো নাম নিখিল সেনগুপ্ত। বাবার নাম যতীশ চন্দ্র সেনগুপ্ত ও মা সরোজিনী সেনগুপ্ত। তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের দশ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ। ‘সিরাজের স্বপ্ন’ নাটকে সিরাজ চরিত্রে অভিনয়েরর মধ্য দিয়ে নাট্যজীবন শুরু করেন নিখিল সেন। এরপর তিনি অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন। নির্দেশনা দিয়েছেন অন্তত ২৮টি নাটকে।