নয় বছর ধরে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে প্রতিনিধিত্ব করছেন সালমা খাতুন। বয়স ৩০ পেরিয়ে গেলেও এখনো অপরিহার্য তিনি। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার কীভাবে আরও দীর্ঘ করা যায় সেটিই অফস্পিনিং অলরাউন্ডারের এখনকার ভাবনা।
চ্যানেল আই অনলাইনকে দেয়া সাক্ষাতকারে বাংলাদেশের টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক জানালেন, দেশের হয়ে আরও ৫ বছর খেলার ইচ্ছের কথা।
মেয়েদের আইপিএল হিসেবে সমাদৃত টি-টুয়েন্টি চ্যালেঞ্জে ট্রেইলব্লেজার্সকে চ্যাম্পিয়ন করিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বুধবার রাতে ঢাকায় ফিরেছেন সালমা। ভেলোসিটির হয়ে খেলা জাহানারা আলমও ফিরেছেন একই ফ্লাইটে।
ফাইনালে ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বোলিংয়ে এসে ম্যাচজয়ী স্পেল। শিরোপা জয়ে অবদান রাখতে পেরে কতটা খুশি আপনি?
সালমা: অনেক আনন্দিত। প্রথমবার এই ধরনের টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে পারা অত্যন্ত আনন্দের। যদি দেখে থাকেন, তিনটি ম্যাচেই আমি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বোলিংয়ে এসেছি। চাপ সামাল দিতে পেরেছি আত্মবিশ্বাস ও অভিজ্ঞতার কারণে।
বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলেছেন। মানিয়ে নিতে কোনো সমস্যা হয়েছে?
সালমা: একদমই হয়নি। ভারতীয় কয়েকজন ক্রিকেটারের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল। বাকি খেলোয়াড়দের সঙ্গেও এবার খুব ভালো বোঝাপড়া হয়েছে। খুব ভালোভাবেই সবার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি। ওরা খুব ভালোভাবে আমাকে গ্রহণ করেছে। ভালো পারফরম্যান্স করতে এটি খুবই সহায়ক ছিল। আর ওখানকার আবহাওয়া ও উইকেট অনেকটাই আমাদের দেশের মতো। খুব বেশি পার্থক্য নেই। এতে সুবিধাই হয়েছে।
বিদেশের মাটিতে টি-টুয়েন্টি আসর কতটা উপভোগ করেছেন?
সালমা: আয়োজকরা প্রতিটি দলকে অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। সবকিছুই ছিল সাজানো-গোছানো। ব্যবস্থাপনা ছিল দুর্দান্ত। দুবাইয়ে আইসিসি ক্রিকেট একাডেমি ছিল আমাদের অনুশীলন ভেন্যু। সেখানে আর কোনদিন অনুশীলন করা হবে কিনা জানি না। খুব উপভোগ করেছি, জায়গাটা অসাধারণ। আফসোস, টিম প্রটোকলের কারণে আইসিসি সদর দপ্তর ঘুরে দেখা হয়নি।
মেয়েদের আইপিএলে ডাক আসার পর খুব বেশিদিন অনুশীলনের সুযোগ পাননি। এত বড় আসরের জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করেছিলেন?
সালমা: এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) ধন্যবাদ দিতে হয়। বোর্ড আমাদের মিরপুরে ফ্লাডলাইটে অনুশীলনের সুযোগ করে দিয়েছিল। ওটা খুব কাজে দিয়েছে। অনুশীলন সুবিধা ছাড়াও সব ব্যাপারেই বিসিবি আমাদের সাহায্য করেছে।
ছেলেদের ক্রিকেটের মতো মেয়েদের বেলায়ও স্পিনই বাংলাদেশের শক্তি। টিম টাইগ্রেসের স্পিন আক্রমণ নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?
সালমা: স্পিনে আমরা সবচেয়ে এগিয়ে। আমাদের স্পিন আক্রমণ সবখানেই প্রশংসিত। ব্যাটিংয়ে যদি আমরা আরেকটু উন্নতি করতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আরও ভালো করা সম্ভব।
মেয়েদের আইপিএলে ভালো করার পর ক্রিকেট ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবনায় কোনো বদল এসেছে কিনা?
সালমা: আমি তো আরও ৫ বছর দেশকে সার্ভিস দিতে চাই। আমার ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিতে অনেকবেশি কষ্ট করতে হবে। ফিটনেস ও স্কিল নিয়ে অন্যদের চেয়ে বেশিই কাজ করতে হবে। অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে। সব জয় করে যেন খেলে যেতে পারি সেজন্য শিগগিরই কাজ শুরু করব। যেহেতু বিদেশি লিগে খেলার ডাক পাচ্ছি, এটি ক্যারিয়ার নিয়ে নতুন করে ভাবতে অনুপ্রাণিত করছে।