ইডেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভীন হত্যাকাণ্ডে ৭২ ঘন্টা পার হলেও জড়িত সন্দেহভাজন দুই গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তারা বলছে, তদন্তে আশানুরূপ অগ্রগতি হয়েছে যে কোন মুহূর্তে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
পলাতক দুই গৃহকর্মী হলেন স্বপ্না ও রেশমা। স্বপ্নার বয়স আনুমানিক ৩৬, রেশমার বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। স্বপ্নার বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও রেশমার বাড়ি কিশোরগঞ্জে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ দুজনকে ধরতে পুলিশের পাশাপাশি এলিট ফোর্স র্যাব ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা তৎপরতা চালাচ্ছে।
মাহফুজা চৌধুরীর স্বামী ইসমত কাদির গামা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। মাহফুজা চৌধুরী ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। সুকন্যা টাওয়ারের ১৫ ও ১৬ তলায় দুটি ফ্ল্যাটে এই দম্পতির বহুদিনের সংসার।
ইসমত কাদির গামা বলেন: যে দুজন গৃহকর্মীকে সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের মাস দুয়েক আগে কিশোরগঞ্জ ও শরীয়তপুর থেকে আনা হয়েছিল। এই ভবনের এক মহিলার মাধ্যমে তাদের এনেছিল মাহফুজা।
![](https://i0.wp.com/www.channelionline.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-Reneta-16-04-2024.gif?fit=300%2C250&ssl=1)
চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ইডেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজার মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে দুই গৃহকর্মী রেশমা ও স্বপ্না পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রেশমা ও স্বপ্নাকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে। খুব দ্রুতই এর রহস্য উদঘাটিত হবে, আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এর আগে সোমবার মাহফুজা চৌধুরীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্তে শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক (ডিএমসিএইচ) মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন: মরদেহের একটি আঙুল ভাঙা ছিলো। তাকে (মাহফুজা) মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড একজনের পক্ষে সম্ভব হয়নি। একাধিক ব্যক্তি এই হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে মনে হয়। মৃত নারীর ঠোঁটে, মুখে, আঙুলে ধস্তাধস্তির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
মামলার এজাহার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, দুই গৃহকর্মীর রুমা ওরফে রেশমার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে। এ বছরের ৪ জানুয়ারি থেকে সে নিহত মাহফুজা চৌধুরীর বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে। অপর গৃহকর্মী স্বপ্নার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ইটনা থানাধীন রায়কুটি এলাকায়। গত ১৮ জানুয়ারি সে মাহফুজা চৌধুরীর বাসায় কাজে যোগ দেয়।
রোববার বিকেলে রাজধানীর সায়েন্সল্যাবের সুকন্যা টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ ও স্বজনদের ধারণা ছিল মাহফুজাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে ওইদিন বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে। পরদিন সোমবার নিউমার্কেট থানায় দুই গৃহকর্মীকে প্রধান আসামি করে মাহফুজার স্বামী ইসমত কাদির গামা মামলা করেন।