অবশেষে শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক আরজ আলীর নামে নেত্রকোণা সরকারি মহাবিদ্যালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক আরজ আলী গ্রন্থাগার এবং দর্শন বিভাগে শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক আরজ আলী সেমিনার কর্নার উদ্বোধন করা হয়েছে ।
অথচ গ্রন্থাগারের নামকরণের সিদ্ধান্তটি হয়েছিল ১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে কলেজ আয়োজিত প্রথম শোক সভায়।
স্থাপনাগুলো উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আবুল কালাম আজাদ।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহীদ অধ্যাপক আরজ আলীর ভাইয়ের ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম, কলেজ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর সিরাজুলইসলাম, দর্শনশাস্ত্রের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুলহোসেন এবং লাইব্রেরির প্রফেসর-ইনচার্জ মোহাম্মদ আবু সাঈদ।
কলেজের বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকরা ছাড়াও সাবেক ছাত্র এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা সেসময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক আরজ আলী দেশপ্রেমের যে আদর্শ স্থাপন করে গেছেন তা অনুকরণীয় ও স্মরণীয়।তার পূণ্যস্মৃতিকে ধরে রাখার ধারাবাহিকতায় ১৯৭২ সালে শহীদ স্মরণে নেত্রকোণা কলেজে স্থাপিত স্মৃতিস্তম্ভটির প্রয়োজনীয় সংস্কার, উন্নয়ন ও যথাযথভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অধ্যাপক আরজ আলী
মহান মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে কিংবদন্তিতুল্য এবং ছাত্রপ্রিয়তা অর্জনকারী অধ্যাপক আরজ আলীকে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাদান ও সাংগঠনিক কাজের অভিযোগে পাকিস্তানী বর্বর বাহিনী ও তাদের দেশীয় দোসরেরা কলেজের টিচার্স মেস থেকে একাত্তরের ১২ আগষ্ট বন্দী করে তার নিজ এলাকা সুসং দূর্গাপুরের বিরিশিরি সেনাক্যাম্পে নিয়ে যায়।
মৃত্যুর আগে পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রতি বশ্যতা স্বীকারের জন্য তার উপর চালানো হয় অকথ্য নির্যাতন। কিন্তু তিনি অসম সাহসিকতায় বশ্যতা স্বীকারে অস্বীকৃতি জানালে ১৬
আগষ্ট সোমেশ্বরী নদীর তীরে তাকে হত্যা করা হয়।
শহীদ এ বুদ্ধিজীবীর নামে শোকে ও বিয়োগ ব্যথায় এদেশের বাউলেরা রচনা করেছিলেন অমর এক গান: কই গেলা ভাই আরজ আলী, তোমার জন্য কাঁদিতেছে শত শত বাঙালি।
শহীদ অধ্যাপক আরজ আলী ১৯৭২ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গেজেটভূক্ত একজন শহীদবুদ্ধিজীবী এবং বাংলাদেশ ডাক বিভাগ তার ছবি সম্বলিত স্মারক ডাকটিকেটও প্রকাশ করে।