অক্সফাম ইন্ডিয়া-সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার বিদেশী অনুদান পাওয়ার লাইসেন্স নবায়ন না হওয়ার পর অক্সফাম বলছে, এতে ভারতের ১৬ রাজ্যে চলমান মানবিক ও সামাজিক কাজগুলো ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১ জানুয়ারি ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, অক্সফাম ইন্ডিয়াসহ বেশ কয়েকটি সংস্থাকে বিদেশী অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইনে (এফসিআরএ) সঠিক সময়ে নবায়নের আবেদন না করায় বিদেশি তহবিল গ্রহণ সংক্রান্ত লাইসেন্স হারিয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ছয় হাজারের বেশি এনজিও ও বিভিন্ন সংস্থা বিদেশি তহবিল সংক্রান্ত লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেনি।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এনডিটিভিকে জানান, ওই এনজিওগুলোকে লাইসেন্স নবায়নের জন্য নির্ধারিত সময়ের আগেই নোটিস পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো আবেদন না করায় তাদের লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায়।
অনুদান সংক্রান্ত লাইসেন্স বাতিল হওয়া এনজিওদের তালিকায় অক্সফাম ইন্ডিয়া ট্রাস্ট, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, দ্য ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন এবং লেপ্রোসি মিশনের মতো উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত কয়েক মাস আগেই প্রতিষ্ঠানগুলোও লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এই তালিকায় আছে টিউবারকুলোসিস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া, দ্য ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল সেন্টার ফর আর্টস এবং ইন্ডিয়া ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের মতো শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো।
অক্সফাম ইন্ডিয়া বলছে, লাইসেন্স বাতিল করা সরকারের সিদ্ধান্ত কিন্তু এই সময়ে আমাদের বিদেশি অনুদান প্রয়োজন। আমরা ১৬টি রাজ্যে বেশ কিছু মানবিক ও সামাজিক কাজ করছি। এতে কাজগুলো ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।
অক্সফাম ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অমিতাভ বেহার বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত সংকটের সময়ে যাদের সাহায্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, সংস্থা তাদের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এই প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করবে।
ভারতে বর্তমানে ১৬ হাজার ৮২৯টি এনজিও রয়েছে যাদের এফসিআরএ (ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগ্যুলেশন অ্যাক্ট) লাইসেন্স রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্সের মেয়াদ আছে ৩১ মার্চ ২০২২ সাল পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে এনজিওগুলোকে তাদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করতে হবে।
এফসিআরএ আইনের অধীনে ভারতে ২২ হাজার ৭৬২টি এনজিও নথিভুক্ত বলে জানিয়েছে পিটিআই। বিদেশি অনুদান গ্রহণ করতে হলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই এফসিআরএ লাইসেন্স নিতে হবে।
এনজিওদের এই লাইসেন্স সংক্রান্ত জটিলতার শুরু মিশনারিদের পরিচালিত একাধিক চ্যারিটি সংস্থাকে কেন্দ্র করে। এই মিশনগুলো অনাথ ও বাস্তুহারা শিশুদের আবাসনের ব্যবস্থা করে দেয়। বিদেশি সহায়তা ছাড়া এই কাজ তারা চালাতে পারে না।
কয়েক সপ্তাহ আগে গুজরাটে পুলিশের কাছে মিশনারিস অব চ্যারিটির প্রধানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ ওঠে। সেখানে বলা মিশন থেকে তরুণীদের খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানায়, তাদের কাছেও এমন একাধিক অভিযোগ এসেছে আগেও।