গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় আটক ৬ জন আসামি ধর্ষণের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতের বিচারকদের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে।
রোববার রাতে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল।
তিনি বলেছেন, ঘটনার সাথে জড়িত ৬ জন আসামী সন্ধ্যার পর গোপালগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবির, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া সুলতানা লিপি ও মো. শরীফুর রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছেন।
আদালতের বিচারকদের কাছে ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর প্র্রসঙ্গে সদর থানার ওসি তদন্ত শীতল পাল সাংবাদিকদের বলেন, আসামীরা ধর্ষণে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। একে একে ৬ আসামি বিচারকদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও আদালতের বিচারকদের জানিয়েছেন।
রোববার বেলা ৩টার পর আসামিদের আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী রেকর্ডের জন্য আদালতের বিচারকদের কাছে আবেদন করে পুলিশ। পরে তারা জবানবন্দী প্রদান করে।
কেন ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করা হল, আদালতে বিচারকদের কাছে কিছু বলেছেন কিনা, এ প্রশ্ন এড়িয়ে যান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক ছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. রাজিউর রহমান বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা করেন।
গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের গ্রেফতারসহ বিচারের দাবীতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এরপর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণ মামলার ৬ আসামি রাকিব মিয়া ওরফে ইমন (২২), পিয়াস ফকির (২৬), প্রদীপ বিশ্বাস (২৪), মো. নাহিদ রায়হান (২৪), মো. হেলাল (২৪) এবং তূর্য মোহন্তকে (২৬) গ্রেপ্তার করে র্যাব আসামিদের গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশের কাছে হস্থান্তর করেন।
অন্যদিকে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সব ক্লাস-পরীক্ষা আগামী (৩ মার্চ) বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া যদি কোনো বিভাগ পরীক্ষা নিতে চায়, সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি সাপেক্ষে আগামী রোববার (৬ মার্চ) থেকে পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।