ফ্রান্সের ক্যালে ‘জাঙ্গল’ ক্যাম্প শরণার্থী শিবিরে কয়েকশ’ শরণার্থী এখনো বসবাস করছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। তবে ফরাসি কর্তৃপক্ষের দাবি, ক্যাম্পটি বর্তমানে খালি আছে।
বিবিসি’র ইউরোপ প্রতিনিধি গ্যাভিন লি জানান, শরণার্থী শিবিরটিতে প্রায় দু’শ শিশু-কিশোর খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। তাদের দিনে থাকা তো দূরের কথা, রাতে ঘুমানোরও কোনো জায়গা নেই। বাবা-মা বা অভিভাবক ছাড়া সেখানে রয়েছে সেই ছেলেমেয়েরা।
এদের মধ্যে ৩০ জনের মতো একটি গুদামে থাকার সুযোগ পেলেও বাকিদের থাকার জায়গা হয়নি এখনো। পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন লি। এসব শিশু-কিশোর সময়ের সাথে সাথে আরও মরিয়া হয়ে উঠছে।
গত সোমবার থেকে শুরু হয়েছে বন্দরনগরী ক্যালের এই ক্যাম্প থেকে অধিবাসীদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার কাজ। এ পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার ৬শ’ শরণার্থীকে বিভিন্ন রিসেপশন সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ফ্রান্স সরকার। এদের মধ্যে রয়েছে অভিভাবকহীন দেড় হাজার শিশু-কিশোর।
ক্যাম্পটি বন্ধ করে দেয়ার জন্য তাবু থেকে শুরু করে সব ধরণের অস্থায়ী আবাসনগুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। শরণার্থীদের অনেকে তাদের আবাসনে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। সেই আগুন নিভিয়ে তাবু ও ঘরবাড়িগুলো ভেঙ্গে দেয়া হয়।
ক্যালে বন্দর পাস-দ্যে-ক্যালে’র প্রধান ফাবিয়েন বুচিও কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলেও দাবি করেছেন।
থাকার সব ধরণের ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়ার কারণে ক্যালে ক্যাম্পে খোলা আকাশের নিচে দিনরাত থাকতে হচ্ছে অভিভাবকবিহীন ছেলেমেয়েদের।
আবাসন ভেঙ্গে ফেলা এবং শরণার্থীর সফল স্থানান্তরের পরও কীভাবে এতগুলো ছেলেমেয়ে সেখানে রয়ে গেল আর কর্তৃপক্ষ কেনই বা ব্যাপারটি অস্বীকার করছে – সে প্রশ্নের জবাব কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না।
সেভ দ্য চিলড্রেন’র ডরোথি স্যাং বিবিসিকে জানান, ক্যাম্পে রয়ে যাওয়া শিশুদের নাম স্থানান্তরের জন্য নিবন্ধন করা হয়নি।
তিনি বলেন, ক্যাম্পে যখন আগুন ছড়িয়ে পড়ে, পুরো ক্যাম্প খালি করে ফেলা হচ্ছিল। কিন্তু আগুন লাগায় শিশুদের নিবন্ধন কার্যক্রমটি সে সময় স্থগিত করা হয়। অন্যদিকে শরণার্থীদের সরিয়ে নেয়ার জন্য আনা সবগুলো কন্টেইনারও ততক্ষণে ভরে গেছে। তাই নিবন্ধন না হওয়া সেই ছেলেমেয়েদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা ছিল না।
নিবন্ধনহীন ছেলেমেয়েদের অনেকে পালিয়ে গেছে। তাদের অবস্থান এখনো জানা যায়নি।