বর্ষা মৌসুমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আয়োজন করার মাশুল গুনতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। কোটি ক্রিকেট ভক্তদের সীমাহীন বিরক্তির জন্ম দিয়ে বৃষ্টিই হয়ে উঠছে মূল খেলোয়াড়। ভারতের পর সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও অব্যাহত রয়েছে বৃষ্টির যন্ত্রণা।
বিশ্বসেরা টেস্ট দল প্রোটিয়াদের বিপক্ষে অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্য দেখানো টাইগারদের সামনে প্রথম টেস্ট ম্যাচটি জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হলেও বৃষ্টির বাধায় বঞ্চিত হতে হয় বিরাট প্রাপ্তি থেকে। শেষ টেস্টও একই পরিণতির দিকেই এগুচ্ছে ফলাফল।
তবে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল ও ৯ নন্বরে থাকা বাংলাদেশ এখনো পারে এক রোমাঞ্চকর ম্যাচের জন্ম দিতে। তার জন্য অবশ্য শেষ দিনে আবহাওয়ার আনুকূল্য পেতে হবে। পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচের তিন দিনই বৃষ্টির কারণে পণ্ড হয়ে যাওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার আমেজ খোঁজা অর্থহীনই মনে হতে পারে।
কিন্তু ক্রিকেট ইতিহাসে এমন উদাহারণও রয়েছে। যার প্রতিফলন ঘটলে ফলাফলও চলে আসতে পারে ম্যারম্যারে মিরপুর টেস্টে। আর এ জন্য বাংলাদেশকে তাদের দ্বিতীয় ইনিংসটি এবং সাউথ আফ্রিকাকে তাদের প্রথম ইনংসটি ছাড় দিতে হবে।
এর ধারাবাহিকতায় পঞ্চম দিনে আরও সময় ব্যাট করে টাইগাররা দলীয় স্কোরে কিছু রান যুক্ত করবে। পরবর্তীতে সাউথ আফ্রিকা ও বাংলাদেশ তাদের একটি করে ইনিংস বর্জন করলে সাউথ আফ্রিকাকে জয়ের লক্ষ্যেই ব্যাট করতে হবে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে।
যার ফলে বৃষ্টির কবলে নিষ্প্রাণ এই ম্যাচটি হয়ে উঠতে পারে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এক রোমাঞ্চকর লড়াই। পূর্বেও এমন উদাহরণের সাথে জড়িয়ে আছে সাউথ আফ্রিকার নাম। তবে অনন্য নজির সৃষ্টি করা রোমাঞ্চকর সেই লড়াইয়ে ইংল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয় প্রোটিয়ারা।
পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচের আগেই প্রোটিয়ারা ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় সিরিজ জয়ী হয় সাউথ আফ্রিকা।
স্বাগতিক সাউথ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার ২০০০ সালের ১৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া সেই ম্যাচ হয়েছিলো সেঞ্চুরিয়ানের সুপার স্পোর্ট পার্ক স্টেডিয়ামে। হ্যান্সি ক্রনিয়ে, ল্যান্স ক্লুজনার, হার্শেল গিবস, শন পোলক, জ্যাক কেলিসদের মতো কিংবদন্তিরা তখন প্রোটিয়া দলে।
প্রথম দিন শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান সংগ্রহ করা সাউথ আফ্রিকা টেস্টের শেষ দিনটিতে আট উইকেট হারিয়ে ২৪৮ রান নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে।
বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দিনের খেলা মাঠেই গড়ায়নি। মাইকেল ভনের মতো তারকার ইংল্যান্ড দল নাসির হোসেনের নেতৃত্বে ৭৫.১ ওভার খেলে ২৫১ রান নিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়।
স্বাগতিক বাংলাদেশ ও সাউথ আফ্রিকাও কি তেমনই একটি রোমাঞ্চের স্বাক্ষর রাখবেন ক্রিকেট ইতিহাসে? তবে এই প্রশ্নের উত্তরের আগে প্রথম শর্তটি হলো প্রকৃতির আনুকূল্য।