ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে দেশের ব্যবসায় ও অর্থনীতিতে নিজস্ব দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। অন্যান্য দেশের দিকনির্দেশনা দিয়ে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগোতে পারবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসা ও অর্থনীতি নিয়ে তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মেলন বিষয়ে তিনি এ কথা বলেন। মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান এই সম্মেলনের উদ্ধোধন করেন।
আটটি দেশের ৭৫ জন স্বনামধন্য গবেষক এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারণ’ শীর্ষক এই দু’দিনব্যাপী তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনর আয়োজক ঢাবি ‘ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ’।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন ব্যবসায় ও অর্থনীতির মডেল তৈরির জন্য সুপরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের টাফ্টস ইউনিভার্সিটির পার্থ এস. ঘোষ। বিশেষ অতিথি ছিলেন যথাক্রমে কেনিয়ার ইউনাইটেড স্টেটস্ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর পল তিয়াম্বে জেলেযা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল-আইন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ঘালেব এ. এল রেফায়ে।
সম্মেলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিজনেস স্টাডিজ বিভাগের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম ও সহকারী সমন্বয়ক সাদিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উদ্বোধনী অধিবেশনে দেশি-বিদেশী গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, ‘এখন আমাদেরকে নিজস্ব গবেষণা, নিজস্ব দিক নির্দেশনার মাধ্যমে এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে যৌথ গবেষণার মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এজন্য আমাদের এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন।’
‘এখানে দেশি-বিদেশি সব স্বনামধন্য গবেষকদের উপস্থিতিতে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এতে আমাদের গবেষকরা অনেক কিছু জানতে পারবে, শিখতে পারবে। এতে ক্রস বর্ডার গবেষণা আরও উৎসাহিত হবে। উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে কাজ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।’
উদ্বোধনী পর্বে পার্থ এস. ঘোষ তার প্রবন্ধ ‘নার্চারিং দ্য ইনোভেটিভ সোসাইটি ফর অল-রাউন্ড ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট: টুর্য়াডস ক্যাপিটালিজম ২.০’-এ তিনি ভবিষ্যতে ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক অর্থনীতির মোকাবেলা নিয়ে কথা বলেন। তিনি একটি ‘ইনোভেটিভ এবং এন্টারপ্রাইজিং সোসাইটি’র মডেল উপস্থাপন করেন।
পল তিয়াম্বে জেলেযা ‘গ্রোথ অ্যান্ড ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট: লেসন্স ফ্রম আফ্রিকা’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। জেলেযা উল্লেখ করেন, অর্থনীতিতে, রাজনীতিতে সামাজিক গঠনে এবং শিক্ষায় সাহস এবং উন্নত চিন্তা ধারা ভবিষ্যতকে সুন্দরভাবে তৈরি করতে সহায়তা করবে।
ঘালেব এ. এল রেফায়েনিজ গবেষণা ‘রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইন হাইয়ার এডুকেশন্স ইনস্টিটিউশনস’ উপস্থাপন করেন। তিনি এখানে বিভিন্ন ভাষার দক্ষতা বাড়ানোর ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো.আখতারুজ্জামান বিশ্বায়নের ক্রমবৃদ্ধি সত্ত্বেও সামাজিক অসমতা বৃদ্ধির কথা আলোচনা করেন। তিনি বলেন, অক্সফামের একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে গত বছরের ৮২ শতাংশ সম্পদ ১ শতাংশ মানুষের কাছে চলে গেছে। একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা ও ধারণা তৈরি করতে সুন্দর ও সমতাভিত্তিক সমাজ তৈরি করতে পারে বলে এসময় তিনি মন্তব্য করেন।
সমাপনী বক্তব্যে সম্মেলনের সহ-প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. সাদিকুল ইসলাম সবাইকে ধন্যবাদ জানান।