ছাত্রলীগ নেতাদের চিরকুটের মাধ্যমে সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি করানোর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন ড. শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম পাল্টা অভিযোগ করে বলেছেন, এখানে একটি ইতিবাচক কাজকে পুরোপুরি নেতিবাচক হিসেবে দেখানো হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রকার ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে চ্যানেল আই অনলাইনকে ডিন বলেন, ‘এখানে আসলে একটি ইতিবাচক কাজকে পুরোপুরি নেতিবাচক হিসেবে দেখানো হয়েছে। ঢাবির অনেক গ্র্যাজুয়েট আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেই চাকরিতে প্রবেশ করে। আমি আমাদের সেইসব শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে, তারা যেন সকালে চাকরি করে ইভনিং শিফটে ক্লাস করতে পারে সেই ব্যবস্থা করেছি। ওরা আমাদের নিয়মিত ছাত্র। তাদের আবার নতুন করে কেন পরীক্ষা দিতে হবে?’
ব্যবসায় শিক্ষার ডিন আরও বলেন, যাদের গ্র্যাজুয়েশন করার পর আর্থিক অসুবিধার কারণে দুই থেকে তিন বছরের একটা গ্যাপ হয়ে গেছে, তারাই এ সুবিধাটা ভোগ করছেন। ভর্তি হওয়া ওইসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরীক্ষা না দেয়া শিক্ষার্থী একজনও নেই। আমাদের নিয়মিত ছাত্রদের আমরা মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচন করেছি, তাদেরকে সাহায্য করার জন্য।’
জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াদের ডাকসু পদ শূন্য ঘোষণা করে উপনির্বাচনসহ ৩ দাবি নিয়ে রোববার বিকেলে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তাদের অন্য দুটি দাবি হলো: ক্ষমতার অপব্যবহার ও নৈতিক স্খলনের দায়ে বাণিজ্য অনুষদের ডিনের পদত্যাগ এবং চিরকুট সুপারিশে ভর্তি করানোর দায়ে ঢাবি ভিসি ও ডাকসু সভাপতির পদত্যাগ।
মানববন্ধনে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা হাসান আল মামুন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন চিরকুটের মাধ্যমে ছাত্রলীগের ৩৪ জন নেতাকে যে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ বিরোধী কাজ ও নৈতিকতার স্খলন। তাই তাদের উচিত দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করা। এছাড়া ডাকসুর পদগুলো থেকে ছাত্রলীগের আটজন নেতাকে বহিস্কার করে তাদের শূন্য পদগুলোতে পুনরায় নির্বাচন দিতে হবে।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই ছাত্রলীগের সাবেক – বর্তমান ৩৪ জন নেতানেত্রী ব্যাংকিং এবং ইনসুরেন্স বিভাগের সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হন। যাদের মধ্যে ৮ জন ডাকসু এবং হল সংসদে ৮ জন বিজয়ী হয়েছেন।
অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেতাদের চিরকুটের মাধ্যমে সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি করানোর অভিযোগ ও রোকেয়া হলের নিয়োগে হয়ে যাওয়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে রোববার রাতে ক্যাম্পাসে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে আলোর মিছিল’ করে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ ড. জিনাত হুদার সহোযোগিতায়, হল ছাত্রলীগের নেত্রী ও হল সংসদের নেত্রীরা মিলে নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন।
এ সময় তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, ব্যাবসায় অনুষধের ডিন ড. শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম ও রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ ড. জিনাত হুদার পদত্যাগের দাবি করেন।