সমৃদ্ধি চাইলে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন। গণতন্ত্র চাইলে বিরোধীদের। এরকম প্রপাগান্ডা ছড়ানো সুশীলের সংখ্যা অসংখ্য। তবে হ্যাঁ উনারা মেনে নিয়েছেন শেখ হাসিনার সময়ে দেশের সমৃদ্ধি এসেছে এবং আগামীতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
এই সুশীলরা এখন গণতন্ত্র বলতে খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিরোধীদের ক্ষমতায় আসীনকে বুঝাতে চাইছেন। খালেদা জিয়া এবং তার নষ্ট ছেলে আসলে গণতন্ত্র সুইসাইড করবে এই সব জেনেশুনেও তারা সমর্থন করে যাবে। কারণটা পরিস্কার। সুশীলরা চান না দেশে কোন দল পরপর দুইবার ক্ষমতায় আসুক। কোন দল বা সরকার শক্তিশালী হলে সুশীলদের আর মুল্যায়ন থাকে কই। একদা যেই বাংলা সারা পৃথিবীর জিডিপির ১২ ভাগ ছিল, ভারতের জিডিপির অর্ধেক ছিল। সেই বাংলা বৃটিশদের গণতন্ত্র, পাকিস্তানি এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র দেখেছে। বাংলার মানুষ গত আড়াইশো বছরে দুর্ভিক্ষ, মানুষের আহাজারি, অন্ন-বস্ত্র বাসস্থানের হাহাকার এবং বেকারত্বের অভিশাপ দেখেছ।
সমৃদ্ধির ছোঁয়া দেখে নাই। সেই সমৃদ্ধির পথ শেখ হাসিনাই দেখিয়েছেন। গত এক দশকে প্রবৃদ্ধি ৬% থেকে ৭% উপরে উঠেছে। শেখ হাসিনার গৃহীত মেগা প্রজেক্টগুলো শেষ হলে এই প্রবৃদ্ধি অনায়সে ৯% গিয়ে দাঁড়াবে বলেই বিশ্বাস রাখা যায়।
অনেকেই বলার চেষ্টা করেন এই উন্নতি যেকোন সরকার আসলেই হত। এমন ও বলার চেষ্টা করেন দুর্নীতি না হলে এই প্রবৃদ্ধি এখনই ৯% হয়ে যেত। ধরেই নিলাম শেখ হাসিনার সরকারেও অনেক দুর্নীতি হইছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ২০১৮ এর পরিমাপে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি দুর্নীতি হয় এমন দেশ আছে ৩১টি।তাহলে ২০০১-২০০৬ সালে পরপর পাঁচ বছরে বাংলাদেশ কে যারা দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান করেছে তারা কি পরিমান দুর্নীতি করেছে বলার অপেক্ষা রাখেনা।
আজকে ২২০০০ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির কথা বলা হচ্ছে তা হল নন পারফর্মিং লোন। ভারতের বিজয় মালিয়া (কিং ফিসার মালিক) একাই ২১০০০ হাজার কোটি রুপি নিয়া এখন ইংলান্ডে আছেন। গত বছর পর্যন্ত যে ডাটা তাতে বাংলাদেশের মোট লোনের খেলাপি ৮.৬৪% ভারতে ৯.১৯% পাকিস্তানে ১০.০৬% ইটালি, আয়ারল্যান্ডের মত দেশে তা ১৩% বেশি।
বাংলাদেশে সব সময় সীমিত গণতন্ত্র ছিল। বর্তমানে বলা হয় বাক স্বাধীনতা নাই, গণতন্ত্র নাই। আগে চ্যানেল কম ছিল। সরকারের বিরুদ্ধে টিভি চ্যানেলে কিছুই শোনা যেত না। এখন এত চ্যানেল এবং প্রতিটা চ্যানেলে টকশোতে সরকার বিরোধীরা সরকারের চৌদ্দগোষ্ঠি উদ্ধার করে পরিশেষে বলেন বাক স্বাধীনতা নাই।
তাদের সময় গণতন্ত্র এবং বাকস্বাধীনতার রূপ ছিল আইন পাশ করে জাতির জনকের হত্যার বিচারের পথ রুদ্ধ করা। এস এম কিবরিয়া, আহসান উল্লা মাস্টারকে হত্যা করা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা, ২৪ জন নেতা-কর্মী হত্যা এবং শত শত আহত করা। আহতের চিকিৎসা সেবা না দেয়া, থানায় কেস না নেওয়া, জর্জ মিয়া নাটক সাজানো, তদন্তের নামে নাম উল্লেখ না করে পার্শ্ববর্তী দেশকে দায়ী করা।
তখন সোশ্যাল মিডিয়া এত শক্তিশালী না থাকায় হামলা-মামলা, গায়েবী কেস এই সব এত প্রচারেরর সুযোগ ছিল না। পরিপূর্ণ গণতন্ত্রের জন্য শুধু শিক্ষাই না দায়িত্বশীল হওয়া, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া প্রয়োজন। বাঙালি এখনও সে পর্যায় আসে নাই। তাই ২৫০ বছরের হারানো সমৃদ্ধির সু্যোগ হাতছাড়া করার মানে নাই।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)