ভারতের আসাম রাজ্যের গভর্নর জগদীশ মুখী ও মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মার সাথে বৈঠক করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বৈঠকে তারা আসামের সাথে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং সড়ক, রেল, নৌ ও বিমান চতুর্মুখী যোগাযোগ উন্নয়নে বাস্তব পদক্ষেপ নিয়ে ফলপ্রসু আলোচনা করেছেন।
ত্রিপুরা ও আসাম সফররত ড. হাছান মাহমুদ বৃহস্পতিবার অপরাহ্নে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে ও পরে গভর্নরের ‘রাজ ভবনে তাদের সাথে পৃথক সাক্ষাতে মিলিত হন।
আসামের ২৮তম গভর্নর অধ্যাপক জগদীশ মুখী ও ড. হাছান মাহমুদ বাংলাদেশের সাথে আসামের ঘনিষ্ঠতম সম্পর্কের লক্ষ্যে পারস্পরিক যাতায়াত, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও বাণিজ্য বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করেন। একইসাথে ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সবুজ বনায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।
এর আগে তথ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মার সাথে বৈঠক করেন। নৌপথে বাণিজ্য সুগম করতে নাব্যতাসহ চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পর্যটন প্রসারে ঢাকা-গুয়াহাটি সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় চালু করা এবং গুয়াহাটি থেকে আগরতলা হয়ে কক্সবাজার বিমান চলাচল শুরুর বিষয় নিয়ে আলোচনায় হয়।
বাংলাদেশ ও আসামের জনযোগাযোগ বৃদ্ধিকল্পে আসামের ঐতিহ্যবাহী বিশাল রেলপথ নেটওয়ার্র্কের সাথে বাংলাদেশের সংযোগ সাধন ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। স্থল বন্দরগুলোকে আরো কার্যকর করতে অবকাঠামো সংস্কার এবং পণ্য আমদানি-রপ্তানি বিধি যুগোপযোগী করা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন তারা।
এ সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে আসাম রাজ্য সরকার বিশেষ সংর্ধনার জন্য আমন্ত্রণ জানাবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা।
গভর্নরও মুখ্যমন্ত্রী দু’জনেই বৈঠক শেষে টুইট করেছেন। গভর্নর তার টুইট বার্তায় লিখেছেন, বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষকরে সবুজ বনায়ন ও পরিবেশ নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এ সাক্ষাতকে আনন্দের বর্ণনা করে টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের সাথে আসামের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যগত সম্পর্ককে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে গভীরতর করার প্রয়োজন রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর উত্তর-পূর্ব ভারতের জলপথকে সুগম করার চাবিকাঠি। এ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ।’
বাংলাদেশের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম ও সাইমুম সরওয়ার কমল, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন, দিল্লিতে নিযুক্ত উপ-হাইকমিশনার নূরাল ইসলাম এবং গুয়াহাটিতে সহকারি হাইকমিশনার ড. শাহ মোহাম্মদ তানভীর মনসুর এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
২৩ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের ত্রিপুরা ও আসাম সফররত তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এর আগে ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দে’র সাথে বৈঠক করেন। তিনি আগরতলা ও গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব ও আসামের ডাউন টাউন বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনে বঙ্গবন্ধু কর্নার ও জামদানী বিতান উদ্বোধন করেছেন।