আবারও জোড়া সেঞ্চুরির গল্প। সিকান্দার রাজার পাশে ইনোসেন্ট কাইয়ার জায়গায় এবার রেগিস চাকাভা। প্রথম ওয়ানডের চিত্রনাট্যই যেন মঞ্চস্থ হলো হারারেতে। বাংলাদেশকে হতাশায় ডুবিয়ে টি-টুয়েন্টির পর ওয়ানডে সিরিজও জিতল (২-০) জিম্বাবুয়ে। তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে আগামী বুধবার।
হারারেতে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও ৫ উইকেটের জয় পায় জিম্বাবুয়ে। ২৯১ রানের লক্ষ্য স্বাগতিকরা টপকায় ১৫ বল আগেই। ১২৭ বলে ১১৭ রানে অপরাজিত থাকেন রাজা। ওয়ানডে অভিষেক স্মরণীয় করেন টনি মানিইয়ঙ্গা। ১৬ বলে ৩০ রানে মারকুটে ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন।
৪৯ রানে ৪ উইকেট হারানো দলকে পথ দেখান রাজা ও চাকাভা। পঞ্চম উইকেটে তাদের ২০১ রানের রেকর্ড জুটি এনে হাতের মুঠোয় এনে দেয় সিরিজ। জিম্বাবুয়ের আগের সেরা জুটিটি ছিল ১৮৬ রানের। ২০০০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মারে গুডউইন ও গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ারের অবিচ্ছিন্ন জুটিটি ছিল পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ।
রাজার টানা সেঞ্চুরিতে তছনছ হয়ে যায় বাংলাদেশের সিরিজে ফেরার আশা। অধিনায়ক চাকাভা ৭৫ বলে ১০২ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন।
ফিফটি তোলার আগেই রাজাকে আউট করার সুযোগ পেয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। রান আউটের সহজ সুযোগ হেলায় হারান। পরে মিরাজের বলেই একটি স্টাম্পিংয়ের সুযোগ হারান মুশফিকুর রহিম। যার মাশুল দিতে হয়েছে দলকে। পুরো দলেরই ফিল্ডিং ছিল যাচ্ছেতাই। শেষ দিকে কম-বেশি সবার হাত ফসকেই বল বেরোতে থাকে।
অথচ হাসান মাহমুদের পেস তোপে শুরুতে এলোমেলো হয়ে পড়েছিল জিম্বাবুয়ে। দলীয় ১৩ রানে দুই উইকেট তুলে নেন এ তরুণ। পরে মিরাজও আঘাত হানেন। পঞ্চাশের আগেই ৪ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। প্রথম ম্যাচেও দ্রুত ৩ উইকেটি হারিয়ে ৩০৪ রান তাড়া করে জিতেছিল স্বাগতিকরা। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে অবিশ্বাস্য জয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিল তারা।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামার পর বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি আশা দেখিয়েছিল বড় সংগ্রহের। দুর্দান্ত সূচনার পরও থামতে হয় তিনশর আগেই। প্রথম ম্যাচে ৩০৩ রান করে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে পেরে ওঠেনি তামিম ইকবালের দল। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তোলে ২৯০ রান। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অপরাজিত থাকেন ৮০ রানে। ৮৪ বলের ইনিংসে মারেন তিনটি করে চার-ছক্কা।
দুই ওপেনারকে হারানোর পর মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে ভালোই লড়ছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেট জুটি ফিফটি ছোঁয়ার পর উইকেট বিলিয়ে দেন মি. ডিপেন্ডেবল। মাধেভেরের স্পিনে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা মানিওঙ্গার সহজ ক্যাচে পরিণত হন। ৩১ বলে ২৫ রানের ইনিংসে মুশফিক চার মারেন একটি।
ফিফটির আশা জাগিয়ে শান্ত ফেরেন ৩৮ রানে। দলীয় দেড়শর আগে ৪ উইকেট হারিয়ে ছন্দপতন বাংলাদেশের। ক্রিজে নতুন আসা মাহমুদউল্লাহ ও আফিফ হোসেন হাল ধরেন। ৮১ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি লড়াকু সংগ্রহের পথে রাখে টাইগারদের।
দারুণ সব শটে রান রেট বাড়িয়ে দিয়ে আফিফ ৪১ বলে ৪১ করে সাজঘরে ফেরেন আফিফ। ১২ বলে ১৫ রান আউট হন মেহেদী হাসান মিরাজ। শেষটায় মাহমুদউল্লাহ খোলস খুলে রান বাড়ান। বাংলাদেশ যায় তিনশর কাছাকাছি। যা মামুলি বানিয়ে ৪৭.৩ ওভারেই টপকে গেছে জিম্বাবুয়ে। এক ম্যাচ আগেই নিশ্চিত করেছে সিরিজ। সবশেষ ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের কাছে ২-১ এ সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ।