চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

প্রেমিকার বাবা-চাচার পিটুনিতে যুবক নিহত; আধাঘণ্টা পরে বাবার মৃত্যু

কুমিল্লার মাঝিগাছায় প্রেমিকার সাথে দেখা করতে এসে প্রেমিকার বাবা ও চাচার পিটুনিতে আহত হয়ে মারা গেছেন মোহাম্মদ মাহিন (২২) নামের এক যুবক। এদিকে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে আধাঘণ্টা পর হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন মাহিনের বাবা হিরন মিয়া (৬০)।

রোববার ৭ মে দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতদের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা সদর উপজেলার মধ্য মাঝিগাছা গ্রামের মোজা মিয়ার কন্যা তন্নী আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে স্থানীয় চা-দোকানি হিরন মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ মাহিনের। এরই সূত্র ধরে গত বৃহস্পতিবার রাতে তন্নীর সাথে দেখা করতে তার বাড়িতে আসেন মাহিন। এসময় তন্নীর বাবা এবং চাচা জাহাঙ্গীর আলম প্রেমিক মাহিনকে ব্যাপক মারধর করেন। একপর্যায়ে তারা ইট দিয়ে মাহিনের বুক ও মাথা থেতলে দেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মাহিনকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা নিয়ে রোববার বেলা ১১ টার দিকে বাড়িতে ফেরেন মাহিন। বাড়িতে ফেরার কিছুক্ষণ পর তার বুকে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পরে তার মৃত্যু হয়।

নিহত মাহিনের প্রেমিকা নুসরাত জাহান তন্নি বলেন, রমজান মাসের শুরুর দিকে আমি ও মাহিন আদালতের মাধ্যমে বিয়ে (কোর্ট ম্যারেজ) করি। গত বৃহস্পতিবার রাতে মাহিন আমাকে তার সাথে দেখা করতে বলে। সে প্রেক্ষিতে রাত ১১ টার দিকে সে আমাদের ঘরের সামনে আসলে আমার বাবা ও চাচা তাকে মারধর করে।পরে তারা ইট দিয়ে মাহিনের বুক ও মাথা থেতলে দেয়। ধস্তাধস্তি শুনে আমি ঘরের বাইরে এসে দেখি মাহিন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কিন্তু আমি যেন চিৎকার করতে না পারি, এজন্য আমার চাচি আমার মুখ চেপে ধরে। এরপর আমি অজ্ঞান হয়ে যাই, আর কিছু বলতে পারব না।

তন্নী আরও বলেন, আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। যারা আমার মাহিনকে খুন করেছে তাদের ফাঁসি চাই।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মো. হাফিজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,  মাহিন এবং মাহিনের বাবার মৃত্যুর পর প্রেমিকার পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপনে চলে গেছে। এ ছাড়াও সামান্য ঘটনায় দু’জনের মৃত্যুর বিষয়টি এলাকাবাসীকে ব্যথিত করেছে বলেও জানান তিনি।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন বলেন, মাহিনের মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আমরা নিহতদের স্বজন ও মাহিনের প্রেমিকার সাথে কথা বলেছি। তন্নীর ভাষ্য, রমজানের শুরুর দিকে তারা কোর্ট ম্যারেজ করেছিলেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনায় কারা জড়িত এবং কোন আঘাতে মাহিনের মৃত্যু হয়েছে পোস্টমর্টেম রিপোর্টের পর বিস্তারিত জানা যাবে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।