চলতি বছর চলচ্চিত্র, সংগীতসহ শোবিজের নানা অঙ্গনের বহু গুণী-প্রিয় মানুষেরা পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে গেলেন। তাদেরকে হারানোর শোক হৃদয়ে নিয়েই বরণ করতে হবে নতুন বছরকে। অসংখ্য ভক্ত অনুরাগীদের কাঁদিয়ে চলতি বছরে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন যারা, তাদের কথা থাকলো এখানে:
মাসুম বাবুল, নৃত্যপরিচালক
৬ মার্চ প্রয়াত হন নৃত্যপরিচালক মাসুম বাবুল। মৃত্যুর আগে প্রায় দেড় বছর ধরে মরণব্যাধী ক্যানসারের সাথে লড়াই করেন তিনি।দীর্ঘ সিনেমা জীবনে তিনি প্রায় দেড় হাজারের বেশি সিনেমার কোরিওগ্রাফার ছিলেন। তিনবার নৃত্য পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
এম খালেকুজ্জামান, অভিনেতা
২১ মার্চ প্রয়াত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা এম খালেকুজ্জামান। নাটকেই তার উপস্থিতি দেখা গেছে।
ফারুক, অভিনেতা
বাংলা চলচ্চিত্রের ‘মিয়া ভাই’ খ্যাত কিংবদন্তী অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। দীর্ঘদিন ধরে ছিলেন অসুস্থ। চিকিৎসা নিচ্ছিলেন সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চলতি বছরের ১৫ মে প্রয়াত হন তিনি।
মোহন খান, নাট্য নির্মাতা
৩০ মে প্রয়াত হন নাট্য নির্মাতা মোহন খান। তার মৃত্যুতে নাট্য জগতে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে আছে সমুদ্রে গাংচিল, গাংচিল ভালোবাসা, জোনাকীর গল্প, দূরের মানুষ, মধ্যরাতের অশ্বারোহী, বেলাভূমি, সমুদ্র সীমানায়।
মিতা চৌধুরী, অভিনেত্রী
চলতি বছরের ২৯ জুন প্রয়াত হন গুণী অভিনেত্রী মিতা চৌধুরী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ক্যানসারে ভুগছিলেন বলে জানা যায়। নাটক ছাড়াও বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করে আলোচিত হয়েছেন তিনি।
আফজাল চৌধুরী, চিত্রগ্রাহক
৩১ আগস্ট প্রয়াত হন কালজয়ী চলচ্চিত্র ‘জীবন থেকে নেয়া’র কিংবদন্তী চিত্রগ্রাহক আফজাল চৌধুরী। নির্মাতা জহির রায়হানের সিনেমা ‘কাঁচের দেয়াল’ এর মাধ্যমে চিত্রগ্রহণে কাজ শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে জহির রায়হান ছাড়াও বহু খ্যাতিমান নির্মাতার সাথে কাজ করেন আফজাল চৌধুরী। জীবন থেকে নেয়া ছাড়াও তিনি কাজ করেন সঙ্গম, বাহানা, আয়নার মতো চলচ্চিত্রে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। বার্ধ্যক্যজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে তার।
রাজীব আশরাফ, গীতিকার
১ সেপ্টেম্বর মারা যান ‘হোক কলরব’ খ্যাত জনপ্রিয় গানটির গীতিকার রাজীব আশরাফ। তার মৃত্যুতে সংগীতের পাশাপাশি সাহিত্যাঙ্গনেও শোকের ছায়া নেমে আসে। মাত্র ৩৮ বছর বয়সে তার মৃত্যু ছুঁয়ে যায় অনুরাগীদেরও।
সোহানুর রহমান সোহান, নির্মাতা
চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম পরিচিত মুখ ছিলেন নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ এই নির্মাতা চলতি বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন। তার আকস্মিক মৃত্যুকে ঢাকাই সিনেমার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলে মনে করছেন চলচ্চিত্রের মানুষেরা।
সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী, নির্মাতা
গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন কালজয়ী ‘ঘুড্ডি’ খ্যাত নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী। ১৯৮০ সালে ‘ঘুড্ডি’ সিনেমা দিয়ে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন তিনি। এই সিনেমার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ২০২১ সালে একুশে পদক লাভ করেন জাকী।
জিনাত বরকতউল্লাহ, নৃত্যশিল্পী
২০ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী জিনাত বরকতউল্লাহ। শুধু নৃত্য চর্চায় নয়, ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘মারিয়া আমার মারিয়া’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনেত্রী হিসেবেও যাত্রা শুরু করেন। প্রায় ৮০টি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেছেন।
সুজিত রায়, সংগীতশিল্পী
স্বাধীন বাংলা বেতারের শব্দসৈনিক সংগীতশিল্পী সুজিত রায়। চলতি বছরের ২৩ অক্টোবর রাতে প্রয়াত হন তিনি।
তারেক মাহমুদ, অভিনেতা-নির্মাতা ও কবি
নাট্যনির্মাতা, অভিনেতা ও কবি তারেক মাহমুদের আচমকা মৃত্যু সংবাদও সংস্কৃতি অঙ্গনে শোকের ছায়া ফেলে। চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার।
হুমায়রা হিমু, অভিনেত্রী
নাটকের পরিচিত মুখ অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু। চলতি বছরের ২ নভেম্বর রহস্যজনক মৃত্যু হয় তার। মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে ২০০৬ সালে অভিনয়ে আসেন তিনি। পরে টেলিভিশন নাটকে নিয়মিত হন। পরিচিতির পাশাপাশি জনপ্রিয়তাও পান হিমু।