দিনাজপুরে মোবাইলফোনে গেম খেলাকে কেন্দ্র করে স্ত্রী ও মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে শহিদুল ইসলামের (৪০) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (২১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টায় ঘটনার বিষয়ে দিনাজপুর পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ প্রেস ব্রিফিং করেন। এর আগে গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের হেয়াতপুর (চিনির চড়া) গ্রামে এই নির্মম ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন- স্ত্রী মর্জিনা বেগম (৩০) এবং মেয়ে আরফিন জান্নাত (৬)।
পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ জানান, মোবাইলফোনে গেম খেলছিল শহিদুল ইসলামের সন্তান আল আমিন (১৩) ও আফরিন জান্নাত। এ সময় রান্না করছিলেন তাদের মা মর্জিনা বেগম। মোবাইল নিয়ে ছেলেমেয়ের চিৎকার শুনতে পেয়ে দু’জনকেই থামতে বলেন মর্জিনা। এরপরও না থামলে দু’জনকে থাপ্পড় মারেন মা। এতেই উত্তেজিত হয়ে যান তাদের বাবা শহিদুল ইসলাম।
বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে মর্জিনাকে খাটের চৌকাঠ দিয়ে মাথায় আঘাত করেন শহিদুল। পরে মর্জিনা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়। এ সময় দুই ছেলেমেয়ে এগিয়ে আসলে তাদেরও পিটিয়ে গুরুতর আহত হয়।
শহিদুল এই হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে ফন্দি আঁটে। নিজে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করেন, ‘কে আমার স্ত্রী এবং সন্তান্দের পিঠিয়ে ফেলে রেখেছে। সবাই আসুন, দেখুন।
এসময় শহিদুলের আহাজারিতে এলাকাবাসী ছুঁটে আসে। এলাকাবাসীর সহায়তায় ভ্যান রিক্সাযোগে মর্জিনাকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আব্দুল আজিজের কাছে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আহত ভাই-বোনকে উদ্ধার করে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে জান্নাতকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকাল ১১টায় তারও মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তের জন্য মা-মেয়ের লাশ দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে মর্জিনা বেগমের মা গোলাপী খাতুন একটি মামলা করেন।
শ্বাশুরির দেয়া মামলায় স্ত্রী-মেয়েকে হত্যার অভিযোগে শহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বিকেলে আদালতের মাধ্যমে শহিদুলকে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশ।