মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা জান্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন বিশ্লেষকরা। তাদেরকে ফেরত পাঠাবেন নাকি বিচারের মুখোমুখি করবেন সেই বিষয়ে সরকারকে বেশ সতর্কতার সাথে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তারা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের দৃষ্টিতে সরকারের সামনে দু’টি পথ খোলা আছে। সহজ পথটি হলো- জান্তা সরকারের সাথে সমঝোতায় এসে এই দলটিকে সমূলে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া।
তারা বলেন, জানুয়ারি ২০২৪ এর মধ্যভাগ থেকে পার্শ্ববর্তী রাখাইন প্রদেশে আরাকান আর্মি ও সামরিক জান্তা বাহিনীর মধ্যে চলে আসা সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৫০ জন জান্তা বাহিনীর সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে এসে সীমান্তবর্তী তমব্রু অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছে। পালিয়ে আসা এই জান্তা সদ্যস্যদের মধ্যে মূলত সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিজিপি সদস্যই সর্বাধিক। তবে মনে রাখতে হবে, এই বিজিপি বাহিনীর নেতৃত্বসহ পুরো বাহিনীটাই মিয়ানমারের সামরিক জান্তা দ্বারা পরিচালিত।
একটু পিছনে ফিরে যদি তাকাই, ২০১৭’র ২৪ ও ২৫ আগস্টে জান্তা বাহিনী এবং এই বিজিপি সদ্যস্যরা একত্রে অংশ নিয়েছিল রোহিঙ্গা নিধনে, যার ফলোশ্রুতিতে এখনও বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপে বসে আছে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা।
‘‘পালিয়ে আসা এই সামরিক সদ্যসদের মধ্যে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে সেই সকল ব্যক্তির যারা অংশ নিয়েছিল আগস্ট ২০১৭ এর রোহিঙ্গা নিধনে, অথবা তারা জানে কারা অংশ নিয়েছিল এই গণহত্যায়, তাদের নাম-পরিচয় কী। এদের মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে বার্মিজ সামরিক জান্তার গুপ্তচর, যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন কাজ করে আসছে।’’
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের দৃষ্টিতে পালিয়ে আসা এই জান্তা সদস্যদের বিষয়ে সরকারের সামনে দু’টি পথ খোলা আছে। যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য সহজ মাধ্যম হচ্ছে, জান্তা সরকারের সাথে সমঝোতায় এসে এই দলটিকে সমূলে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া।
তবে অধিকাংশ বিশ্লেষক মনে করেন, বাংলাদেশের উচিৎ হবে না এত সহজে ব্যাপারটার মীমাংসা করে ফেলা।’
তারা মনে করেন, সরকারের উচিৎ হবে পালিয়ে আসা এই সেনা-সদ্যস্যদের পরিচয় নিশ্চিত করা। এছাড়াও ২০১৭ এর ২৪ ও ২৫ আগস্টে তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা তারপরই কেবল ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করা যেতে পারে।
তারা আরও মনে করেন, বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনে এই বিষয়ে জাতিসংঘ অথবা আইসিজে বা আইসিসি এর সহায়তাও চাইতে পারে।