জয়পুরহাটে নবম শ্রেণির স্কুলছাত্র হত্যা মামলার ২১ বছর পর ১১ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আব্বাস উদ্দিন আলোচিত এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জয়পুরহাট শহরের দেওয়ানপাড়া মহল্লার মৃত ইউনুস আলী দেওয়ানের ছেলে বেদারুল ইসলাম বেদীন, মোহাম্মদ আলীর ছেলে মনোয়ার হোসেন মনছুর, আজিজ মাস্টারের ছেলে রানা, দক্ষিণ দেওয়ানপাড়া মহল্লার ওয়ারেছ আলীর ছেলে টুটুল, শান্তিনগর মহল্লার শাহজাহান মৃধার ছেলে সরোয়ার রওশন সুমন, আরাফাত নগর মহল্লার মোসলেম উদ্দিনের ছেলে মশিউর রহমান এরশাদ বাবু, তেঘরবিশা মহল্লার মৃত কাবেজ উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম, দেবীপুর কাজীপাড়া মহল্লার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে শাহী, নূর হোসেনের ছেলে রহিম, দেবীপুর মণ্ডলপাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে সুজন ও নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ধুরইল গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে ডাবলু।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের ২৮ জুন বিকেলে জয়পুরহাট শহরের প্রামাণিক পাড়ার ফজলুর রহমানের ছেলে ও পাঁচুরচক মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র মোয়াজ্জেম হোসেন বাড়ি থেকে বের হলে আসামিরা তাকে চিত্রা সিনেমা হল এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যান। এরপর ভিটি এলাকার একটি কবরস্থানের পাশে আসামিরা মোয়াজ্জেমকে ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করে জামালগঞ্জ রোডের একটি আম গাছের নিচে ফেলে রেখে চলে যান। রাতে হাসপাতালে মোয়াজ্জেম মারা যায়। পরে নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক মাহবুব আলম তদন্তে হত্যাকাণ্ডে ১৪ জন জড়িত থাকার বিষয়ে সত্যতা পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আজ আদালত রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি উদয় সিংহ এ রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে বলেন, ২১ বছর আগে সদর উপজেলার এক স্কুলছাত্রকে পায়ের রগ কেটে দেওয়াসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করা হয়। ওই ঘটনায় ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত ১১ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। ১১ জনের মধ্যে ৫ জন কোর্টে উপস্থিত ছিলেন।
তবে এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসামি পক্ষের আইনজীবী নন্দকিশোর আগরওয়ালা বলেন, রায়ে আমরা বেশ ক্ষুব্ধ। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।