অর্থনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতি ও তীব্র জ্বালানি সঙ্কটে বাধ্য হয়ে এবারের এশিয়া কাপ আয়োজন নিজ মাটিতে করছে না শ্রীলঙ্কা। ২৭ আগস্ট থেকে ১১ সেপ্টেম্বর আরব আমিরাতে হবে আসর, যদিও আয়োজক নাম থাকছে লঙ্কানদেরই। তাতেই ৬ মিলিয়ন ইউএস ডলার পাবে শ্রীলঙ্কা। যা টাকার অংকে প্রায় ৫৭ কোটি।
চরম সঙ্কটের মধ্যে থেকেও অস্ট্রেলিয়া আর পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন করেছে দ্বীপ দেশটি। আশা ছিল এশিয়া কাপ আয়োজন করে চমকে দেবে। কিন্তু জ্বালানি সঙ্কট এতটাই তীব্র যে, তিন দিন দাঁড়িয়ে থেকে গাড়িতে পেট্রোল ভরে অনুশীলন করতে মাঠে যেতে হয়েছে ক্রিকেটারদের। শেষ পর্যন্ত এশিয়া কাপ সরিয়ে নিতে তাই বাধ্য হয় লঙ্কান বোর্ড।
২৭ আগস্ট দুবাইয়ে শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে ১৫তম আসরের। নিজ দেশে টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে না পারলেও আয়োজক দেশ হিসেবে যা থেকে ৬ মিলিয়ন ডলার আয় করবে তারা, জানিয়েছেন বোর্ড সেক্রেটারি মোহন ডি সিলভা।
‘শ্রীলঙ্কা এখনও প্রতিটি অংশগ্রহণকারী দলের জন্য ২.৫ মিলিয়ন হোস্টিং ফি, ১.৫ মিলিয়ন টিকিট বিক্রয় ফি এবং আরও ২ মিলিয়ন ফি পাবে। এশিয়া কাপ সরিয়ে নেয়ার কারণ মূলত দেশে বিরাজমান অস্থিরতায় স্টেকহোল্ডারদের সন্দেহ প্রকাশ। আসর আমরা আয়োজন করলে অর্থনীতিতে অবশ্যই পর্যটনও বাড়ত, দেশের ভাবমূর্তিও বাড়ত।’
শ্রীলঙ্কা ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমেছিল মানুষ। বাদ যায়নি ক্রিকেটাঙ্গনের তারকারাও। সনাথ জয়সুরিয়া, মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারাসহ বেশ কজন ক্রিকেটার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তবে সে সবকিছুর বিপরীতে কথা বলছেন বোর্ড সেক্রেটারি। জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কায় টুর্নামেন্ট আয়োজন না হওয়ার পেছনে যতটা না অর্থনৈতিক কারণ জড়িত, এরচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে দেশটির প্রতি নেতিবাচক প্রচারণা।
‘তারা মনে করেছে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি স্টেকহোল্ডারদের আস্থা অর্জনের জন্য অনুকূল নয়। শুধুমাত্র সদস্য দেশগুলোই নয়, এত বড় একটি টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের প্রয়োজন। যেমন ব্রডকাস্টার, স্পন্সর ইত্যাদি। সারাবিশ্বে পেট্রোল নিয়ে আমাদের নেতিবাচক প্রচারণা হয়েছে যা আমাদের উদ্দেশ্যকে সাহায্য করেনি।’
‘স্পন্সরদের বোঝানো কঠিন ছিল এবং শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের জন্য ব্রডকাস্ট ক্রুদের নিরাপত্তা ছাড়পত্রও একটি সমস্যা ছিল। এছাড়াও অন্যান্য দেশ থেকে প্রতিনিধিরা আসতে রাজি হচ্ছিল না। পরে অনেক আলোচনা করে আরব আমিরাতে সরিয়ে নেয়া হয় আসর। তবে সেখানে আমাদের আয়োজকের অধিকার বজায় থাকবে।’