সাতক্ষীরার তালায় ঋষি সম্প্রদায়ের দুই যুবককে মাংস খাওয়ার জন্য শতাধিক ব্যাঙ ধরে পেছনের পা কেটে হত্যার অভিযোগে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ওয়াইল্ডলাইফ মিশন নামের একটি বেসরকারি সংস্থার সহয়তায় ৩ জুলাই বিকেলে তাদের দু’জনকে আটকের পর দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন বলছে, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় এসব উভচর বন্যপ্রাণী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এমন ঘটনা ফের ঘটলে আরও কঠোর হবেন তারা।
জানা যায়, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সদর ইউনিয়নের আঠারই গ্রামের দুই যুবক আশুতোষ ও সরোজিত দাস। ৩ জুলাই দিনভর বৃষ্টি হলে বিকেলে পার্শ্ববর্তী ঢেঙ্গার বিলে প্রজনন ও ডিম ছাড়ার জন্য প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসা বিপন্ন প্রজাতির কোলা ব্যাঙ ধরতে শুরু করে। মাংস খাওয়ার জন্য তারা বিপুল পরিমাণ ব্যাঙ ধরে পেছনের পা কেটে ছেড়ে দেয়। এলাকাবাসী তাদেরকে নিষেধ করলেও উল্টো হুমকি দিতে থাকে। ভুক্তভোগী কৃষকরা এসব প্রাণী রক্ষার্থে কাজ করা স্থানীয় ওয়াইল্ডলাইফ মিশনকে বিষয়টি অবহিত করে। তারা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের উপরও চড়াও হয়। অবশেষে থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিপুল পরিমাণ পা কাটা ব্যাঙ ও বিচ্ছিন্ন পা উদ্ধার করে।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বন্যপ্রাণি নিধনের অপরাধে তাদের দুজনকে দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। এরপর থেকে উক্ত সম্প্রদায় নিজেদের ভুল স্বীকার করে অন্য কেউ করলে ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হওয়ার কথা জানান।
ওয়াইল্ডলাইফ মিশনের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘদিন নিরলসভাবে আমরা বন্যপ্রাণী রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও আন্তরিক হলে এসব বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীদের রক্ষা করা সহজ হবে।
সাতক্ষীরার তালা থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, জরিমানাটাই বড় কথা নয়, সবার জন্য মেসেজ হলো, পরিবেশ রক্ষায় এ ধরণের প্রাণী যারাই হত্যা করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও কঠোর হবে।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ এর বিধানমতে সোনা ব্যাঙ বা কোলা ব্যাঙ নিধন করা সম্পূর্ণ নিষেধ। প্রকৃতিকে রক্ষায় ব্যাঙের প্রজনন মৌসুমে এমন ঘটনা আর যেন না ঘটে।