রাজশাহী মহানগরীর সপুরায় একটি খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানির মালিকের বাসায় দুই নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কোম্পানির মালিকসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে খবর পেয়ে আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ নির্যাতনে গুরুতর আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎকরা একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরজন নেওয়ার কিছুক্ষণ পর মারা যান।
এর আগে মহানগরীর বিসিক শিল্প এলাকার মডার্ণ ফুড নামের কোম্পানির মালিকের বাসায় বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
নিহত শ্রমিকদের একজন রেজাউল ইসলাম (৪৫)। তিনি নওগাঁ জেলার মান্দা থানার সুগনিয়া গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। নিহত অপর শ্রমিকের পরিচয় জানা যায় নি।

বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাজহারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কারখানা মালিকসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, সপুরার মডার্ণ ফুডের মালিক আব্দুল মালেক হাজীর ছেলে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ কারখানা সংলগ্ন বাসায় রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন দুই শ্রমিক। বৃহস্পতিবার দুপুরে ১০ লাখ টাকা চুরির অভিযোগে দুই শ্রমিককে খুঁটিতে বেঁধে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করা হয়। চুরির স্বীকারোক্তি আদায়ে রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত দুই শ্রমিকের ওপর নৃশংস কায়দায় নির্যাতন চলে। নির্যাতনের সময় মোবাইলফোনে ভিডিও ধারণ করা হয়। এই ধরণের দুটি ভিডিও পুলিশ উদ্ধার করেছে।
এদিকে গোপন মাধ্যমে খবর পেয়ে আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম রাত সাড়ে ৯টার দিকে কারখানার সংলগ্ন মালিকের বাসায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় দুই শ্রমিককে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশ পিকআপে তুলে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক রেজাউলকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অপর শ্রমিককে ৮ নং ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। কিন্তু ভর্তির কয়েক মিনিট পর তারও মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে দুই শ্রমিককে উদ্ধারের সময় কারখানা মালিকের ছেলে আব্দুল্লাহ, আব্দুল্লাহর শ্বশুর মাসুম রেজা, শ্যালক মহিউদ্দিন রিয়াল ও ম্যানেজার এমরান হোসেনকে আটক করে পুলিশ । তাদেরকে বোয়ালিয়া থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে রাতেই খবর দেওয়া হয়েছে। ওসি জানান, শুক্রবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এজাহার পাওয়া সাপেক্ষে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান তিনি।