প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারো কাছে হাত পেতে নয়, একুশ যেভাবে মাথা নত না করতে শিখিয়েছে, সেভাবেই আত্মসম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে চলতে হবে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ২১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ‘একুশে পদক ২০২৪’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা অসামান্য অবদান রেখেছেন এমন ২১ বিশিষ্টজনকে এ বছর একুশে পদক প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদকপ্রাপ্তদের হাতে পদক ও সম্মাননা তুলে দেন।
নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আজ দেশের মানুষ ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জেনেছে বলেও উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে অবদান, সেই আন্দোলনের যে ইতিহাস, সেখান থেকেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নামটা মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসকরা যখন আমাদের মায়ের ভাষার অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছিল, সংখ্যাগরিষ্ঠতায় আমরাই ছিলাম বেশি। আর যে ভাষাটা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল, উর্দু, সেটা কারও মাতৃভাষা নয়, পুরো পাকিস্তানের ৭ ভাগ লোকও এটা ব্যবহার করত কি না, সেটাই প্রশ্ন। অথচ আমরা বাঙালিরা ছিলাম প্রায় ৫৫ ভাগ। আমাদের ভাষা কেড়ে নিয়ে দ্বিজাতীয় একটা ভাষা যখন চাপিয়ে দিতে চায়, তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র। তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তমদ্দুন মজলিশসহ আরও কয়েকটি সংগঠন নিয়ে বাংলা ভাষাকে রক্ষার জন্য সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলেন এবং আন্দোলন শুরু করেন। সেই আন্দোলনের পথ ধরেই আমরা আমাদের স্বাধিকার আদায় করেছি স্বাধীনতা পেয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছেন তাদের সম্মাননা জানিয়ে সরকারও ধন্য হতে চায়। যারা জনগণের সেবা করে সরকার তাদের জন্য সবসময়েই সুযোগ তৈরি করে দিতে প্রস্তুত।
একুশে পদকপ্রাপ্ত দই বিক্রেতা জিয়াউল হকের প্রতিষ্ঠিত পাঠাগার ও স্কুল সরকারি করার আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছুক্ষণ আগে আপনারা দেখেছেন, যিনি দারিদ্র্যের কারণে নিজে পড়ালেখা করতে পারেননি, এটা তার ভেতরে একটা যন্ত্রণা ছিল। কিন্তু তিনি থেমে যাননি। সাধারণ কাজ করে, দই বিক্রি করে, একটি ছোট দোকান দিয়ে জীবন-জীবিকা সংসারের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলেন। সঙ্গে অন্যের মাঝে জ্ঞানের সুযোগ করার জন্য তিনি একটি পাঠাগার তৈরি করেন, পাঠাগার তৈরি করে সাধারণ মানুষের পড়াশোনার সুযোগ করে দেন, তিনি একটি স্কুল তৈরি করে দেন। আমি তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তাকে পুরস্কার দিতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।
বিভিন্ন এলাকায় যারা সমাজের মানুষের জন্য করে যাচ্ছেন তাদের খুঁজে বের করার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: কারা পেলেন এবছরের একুশে পদক