সাবেক পর্নো তারকাকে সম্পর্কের কথা ধামাচাপা দিতে ঘুষ দেওয়ার মামলায় আত্মসমর্পণের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার আদালতে উপস্থিত হবেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের আইনজীবী জানিয়েছেন, তার হাতে হাতকড়া থাকবে না। ট্রাম্প মামলায় দায় স্বীকার তো করবেনই না, উল্টো মামলার বৈধতা নিয়ে জোরালোভাবে আপত্তি তোলা হবে বলেও জানিয়েছে তার আইনি দল।
২০০৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলে বরাবরই দাবি করে আসছেন সাবেক পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস। ট্রাম্পও বরাবরই এই দাবি অস্বীকার করেছেন। এর ১০ বছর পর ২০১৬ সালে ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন তখন স্টর্মি ড্যানিয়েলস মিডিয়ার কাছে সম্পর্কের ব্যাপারে মুখ খুলতে চান। মুখ বন্ধ করাতে আইনজীবীর মাধ্যমে ড্যানিয়েলসকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দেন ট্রাম্প। এভাবে অর্থ প্রদান আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ নয়। তবে বিপত্তি বাঁধার কারণ, ট্রাম্প ওই ১ লাখ ৩০ হাজার ডলারকে আইনি খরচ হিসেবে দেখিয়েছেন; ফলে তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়িক হিসাব জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনা ২০১৬’র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগ দিয়ে ঘটায়, নির্বাচনি আইন ভঙ্গেরও অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার শুনানির আগে ট্রাম্পের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি নথিভুক্ত করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। হাতকড়া পড়ানো না হলেও আদালত এলাকায় তাঁকে ঘিরে থাকবেন শতাধিক এফবিআই সদস্য। ট্রাম্পের আইনজীবী জো টাকোপিনা বলেছেন, ট্রাম্প কোনো অপরাধ করেননি, তাই অপরাধ স্বীকারের প্রশ্নই আসে না। আইনি বিশেষজ্ঞদের মত, এই মামলায় শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের কারাগারে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশ কম; বরং জরিমানা হওয়ার সম্ভবনা আছে। দোষী সাব্যস্ত হলেও নির্বাচন করতে পারবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পকে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত করার তীব্র সমালোচনা করছে রিপাবলিকান নেতারা। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত অগ্রহণযোগ্য। মার্কিন আইনি ব্যবস্থাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন ফ্লোরিডার রিপাবলিকান গভর্নর রন ডিসান্টিস। বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বলেছেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়াতে সোচ্চার পরিবারের সদস্যরা। ট্রাম্পের ছেলে এরিক এই মামলার সরকারি আইনজীবী অ্যালভিন ব্র্যাগের বিরুদ্ধে অতীতে অনৈতিক অর্থ গ্রহণের অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে, ইনস্টাগ্রামে ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা বলেছেন, তিনি তার বাবা ও তার দেশর – দু’জনের জন্যই তার মন দুঃখভারাক্রান্ত।
ট্রাম্প তার নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি ভিডিও পোস্ট করে আবারও দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পুরোপুরি বানোয়াট এবং এই মামলার উদ্দেশ্য সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক।