নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ত্রিদেশীয় টি-টুয়েন্টি সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পাকিস্তান।
শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে হওয়া ফাইনালে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ড ৭ উইকেটে ১৬৩ রান করে। জবাবে পাকিস্তান ৩ বল হাতে রেখে জয় পায়।
পাওয়ার প্লেতে আগে ব্যাট করা কিউইরা ৫১ রান স্কোরবোর্ডে তোলার পাশাপাশি দুই ওপেনার ফিন অ্যালেন ও ডেভন কনওয়ের উইকেট হারায়।
তৃতীয় উইকেটে গ্লেন ফিলিপসকে সঙ্গে নিয়ে ৫০ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। মোহাম্মাদ নেওয়াজের বলে লং অনে শান মাসুদের হাতে ধরা পড়েন ২৯ রান করা ফিলিপস। এতে ভাঙে তৃতীয় উইকেট জুটি।
এরপর মার্ক চ্যাপম্যানকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৩৭ রান যোগ করেন ফিফটি পাওয়া উইলিয়ামসন। ৩৮ বলে ৪টি চার ও ২ ছক্কায় ৫৮ রান করা ব্ল্যাক ক্যাপস অধিনায়ক শাদাব খানের বলে লং অনে শান মাসুদের তালুবন্দি হন।
১৯ বলে ২৫ রান করা চ্যাপম্যানও লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। নাসিম শাহর বলে ক্যাচ নেন পাকিস্তানি অধিনায়ক বাবর আজম। জেমি নিশাম ১০ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ১৭ রান করে হন রান আউট। সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ড ১৬৩ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর পেয়ে যায়।
পাকিস্তানের পক্ষে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে হারিস রউফ ২২ রান খরচায় নেন ২ উইকেট। বল হাতে নাসিম শাহ খরুচে হলেও ৩৮ রান দিয়ে পান ২ উইকেট। একটি করে উইকেট শিকার করেন শাদাব খান ও মোহাম্মাদ নেওয়াজ।
১৬৪ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করা পাকিস্তান দলীয় ২৯ রানের মাথায় অধিনায়ক বাবরের উইকেট হারায়। ব্রেসওয়েলের বলে স্লগ সুইপ করতে কেন উইলিয়ামসনের ক্যাচে পরিণত হন ১৫ রান করা বাবর।
পাওয়ার প্লেতে মাত্র ৩৩ রান নিতে পারা পাকিস্তান পরে ব্যাট হাতে আক্রমণাত্মক হতে থাকে। ১০ ওভারে তাদের স্কোর দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৬৪ রান। এরপরই আউট হন ১৯ রান করা শান মাসুদ।
খানিক পর ইশ সোধির বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন ২৯ রান করা মোহাম্মাদ রিজওয়ান। ৬৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে কিউই বোলারদের উপর অতি চড়াও হয়ে ওঠেন মোহাম্মদ নেওয়াজ ও হায়দার আলী। খুব দ্রুতই তারা ৫৬ রান যোগ করে ম্যাচটি পাকিস্তানের পক্ষে নিয়ে যেতে থাকেন।
হায়দার ১৫ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ৩১ রান করার পর সাউদির বলে চ্যাপম্যানের হাতে ধরা পড়লে ফাইনাল জয়ের আশা টিকিয়ে রাখে নিউজিল্যান্ড। খানিক পর আসিফ আলীর উইকেট পেয়ে যান ব্লায়ার টিকনার। তাতে জমে ওঠে খেলা। নেওয়াজ অবশ্য তখনো হাল ধরে ছিলেন।
শেষ ৩ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ২৩ রান, হাতে তখনো ৫ উইকেট। টিম সাউদি করা ১৮তম ওভারে খরচ করেন ১২ রান। ফলে জয়ের জন্য পাকিস্তানের সামনে সমীকরণ ছিল শেষ ১২ বলে ১১ রান।
১৯তম ওভারে বল হাতে নেন টিম সাউদি। তার ওভারে আসে ৭ রান। ফলে শেষ ৬ বলে পাকিস্তানের জয়ের জন্য কেবল ৪ রান দরকার ছিল।
টিকনারের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে এক রান নেন ইফতিখার আহমেদ। দ্বিতীয় বলে নেওয়াজ নেন এক রান। ইফতিখার তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে খেলা শেষ করে দেন।
২২ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে পাকিস্তানের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন ম্যাচ সেরা নেওয়াজ। শেষদিকে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেয়া ইফতিখার ১৪ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ২৫ রান করেন।
কিউইদের পক্ষে ব্রেসওইয়েল ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট পান টিম সাউদি, ব্লায়ার টিকনার। স্পিনার ইশ সোধি এক উইকেট পেলেও ৪ ওভারে ১৪.৫ ইকোনমি রেটে ৫৮ রান দিয়ে ফেলেন। যার মূল্য নিউজিল্যান্ডকে দিতে হয়েছে।