কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মেঘনা নদীতে বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারডুবির ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানার শিশুসন্তান রাইসুল ইসলামের (৫) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ফলে দুর্ঘটনায় নিখোঁজ ৯ জন সবার মরদেহই উদ্ধার করা হলো। উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত হয়েছে।
আজ (২৫ মার্চ) সোমবার দুপুরে পুলিশ সদস্যের শিশুসন্তানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে সকালে পুলিশ সদস্য সোহেল রানা (৩৫) ও বেলন দে (৩৮) নামের একজন ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ফলে দুর্ঘটনায় নিখোঁজ সবার মরদেহই উদ্ধার করা হলো। এতে এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯ জনে।
ভৈরব নৌ থানার ইনচার্জ কেএম মনিরুজ্জামান চৌধুরী মরদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ভৈরবে মেঘনা নদীতে বাল্কহেডের ধাক্কায় পর্যটকবাহী নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার দিন ১ জন নারীর মৃত্যু হয়। এই নিয়ে ট্রলার ডুবির ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত শনিবার রাতে নিহত পুলিশ কনস্টেবল মো. সোহেল রানার বাবা মো. আব্দুল আলিম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থানায় এই ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি মামলা দায়ের করেন। এতে ট্রলারটিকে ধাক্কা দেওয়া বাল্কহেডের সুকানি ও ইঞ্জিন মিস্ত্রিসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়। তবে মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।
মামলাটি ঘটনাস্থলের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থানায় দায়ের করা হয়েছে। তবে নৌ পুলিশ তদন্তকাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি আসামিদের গ্রেপ্তার ও বাল্কহেডটি শনাক্তকরণে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনায় ঘটনার দিন ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর এলাকার সুবর্না বেগম (৩২) নামের একজন নারী ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
নিহত বাকি ৮ জন হলেন- ভৈরব হাইওয়ে থানার পুলিশের কন্সটেবল সোহেল রানা (৩৫), তার স্ত্রী মৌসুমি (২৫), মেয়ে মাহমুদা (৭) ও ছেলে রায়সুল (৫), ভৈরব পৌর শহরের আমলাপাড়া এলাকার ঝন্টু দে’র স্ত্রী রুপা দে (৩০), তার ভাই টুটন দেট মেয়ে আরাধ্য (১২) ও ভগ্নিপতি বেলন দে (৩৮) ও নরসিংদী জেলার বেলাব থানার দড়িকান্দি এলাকার দারু মিয়ার কন্যা আনিকা আক্তার (২০)।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মেঘনা নদীর শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর নিচে ২১ জন যাত্রী বহন করা পর্যটকবাহী একটি ট্রলার অজ্ঞাত একটি বাল্কহেডের ধাক্কা ডুবে যায়। ট্রলারের যাত্রীদের মধ্যে ১২ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে ডুবে যাওয়া ট্রলারের বাকি ৮ যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।