রাজধানীর কমলাপুরে নারায়ণগঞ্জ ফেরত কমিউটার ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এক যাত্রীর সহযোগিতায় হাতেনাতে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে রেলওয়ে পুলিশের কমলাপুর থানা।
গ্রেপ্তারের নাম- আল আমিন (২৩)। পেশায় বাসচালক আল আমিন সক্রিয় বিএনপি কর্মী দাবি পুলিশের। এই সোহাগই নামের একজন আগুন দেওয়ার জন্য আল আমিনের সঙ্গে ২০ হাজার টাকার চুক্তি করে।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে কমলাপুরে ঢাকা জেলার রেলওয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার হোসেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) তিনি বলেন, গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে নারায়নগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা কমিউটার ট্রেনটি ছেড়ে এসে কমলাপুর স্টেশনের ৮ নম্বর প্লাটফর্মের ৯ নম্বর লাইনে এসে পৌঁছায়। যাত্রীরা নেমে যাওয়ার পর ট্রেনের ২০৭৫ নম্বর বগিতে যাত্রী বেশে থাকা আল আমিন ও তার আরও তিনজনের সহযোগিতায় পেট্রোল ঢেলে বগির আটটি সিটের ওপর পেট্রোল ছিটিয়ে গ্যাস লাইটার দিয়ে কয়েকবার আগুন ধরানোর চেষ্টা করে।
কিন্তু গ্যাস লাইটারে ঠিকমতো কাজ হয়নি। এরইমধ্যে ওই বগিতে ঢাকায় আসা এক যাত্রী নেমে যান। পরে কোনো একটি কারণে তিনি আবার উঠে আগুন লাগানো দেখেন। ওই যাত্রী চোর চোর চিৎকার করলে আল আমিন ও তার তিন সহযোগিতা পেট্রোল ভর্তি ব্যাগ ফেলে ট্রেন থেকে দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন প্লাটফর্মে থাকা যাত্রীদের সহায়তায় রেলওয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ সুপার আনোয়ার বলেন, আটক আল আমিনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে, সে পেশায় বাস চালকের সহকারী, মাঝে মাঝে নিজেও বাস চালায়। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে। তার সঙ্গে থাকা তিনজনের মধ্যে অন্যতম ও দলনেতার নাম সোহাগ। সে একই বাসের চালক। এই সোহাগই আগুন দেওয়ার জন্য আল আমিনের সঙ্গে ২০ হাজার টাকার চুক্তি করে।
গ্রেপ্তার আল আমিন পুলিশকে জানিয়েছে, সে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকে। পাশাপাশি বাস দিয়ে নেতা-কর্মীদের আনা-নেওয়ার দায়িত্ব পালন করে। সোহাগও একইভাবে কাজ করত। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
নাশকতায় ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষদের ব্যবহার বাড়ছে। তাই কমলাপুরে থাকা ভাসমান মানুষদের ওপর নজরদারির আছে কি না জানতে চাইলে পুলিশ সুপার আনোয়ার বলেন: রেলস্টেশন কেন্দ্রিক কিছু মানুষ থাকে। যাদের বাবা-মা ও পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। আমরা চেষ্টা করি ভাসমান শিশু-কিশোরদের পরিবারে ফিরিয়ে দিতে। পাশাপাশি যাদের পরিবার পাওয়া যায় না তাদের বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে ভালো একটি নিরাপদ আবাসস্থল করে দেওয়ার চেষ্টা করি। কাউন্সিল করা হয়, কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। বিশেষ করে হরতাল অবরোধের সময়ে এই সকল শিশু কিশোরদের সঙ্গে কথা বলি। তাদেরকে নজরে রাখা হয় যেনো তারা বিপদগামী না হয় বা কেউ টাকার বিনিময়ে হরতাল অবরোধে নাশকতায় ব্যবহার না করতে পারে। আমরা ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশ তৎপর আছি।
পুলিশ সুপার আনোয়ার বলেন, পুলিশ সদর দপ্তরের ঘোষণা অনুযায়ী নাশকতাকারীকে গ্রেফতারের সাহায্য করায় ওই যাত্রীকে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার করা হবে। তবে ওই যাত্রীর নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি রেলওয়ে পুলিশ।