দিল্লিতে শ্রীলঙ্কার তারকা ক্রিকেটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজকে টাইমড-আউট করে ফিরিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও আলোচনা থামেনি তা নিয়ে। এমন আউটের পক্ষে-বিপক্ষে নানান মত দিচ্ছেন সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটার, বিশ্লেষকরা। ম্যাথুজকে টাইমড আউট করায় সাকিবের ক্রিকেট চেতনা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে। তবে সমালোচকদের মুখে কুলুপ এটেছে ক্রিকেটের আইন প্রণয়ন সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)। বিষয়টি নিয়ে এবার বিবৃতি দিয়েছে তারা।
এমসিসি সরাসরি জানিয়েছে, ওই আউটের বিষয়ে আম্পায়াররা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। কারণ, তাদের বিকল্প কোনও উপায় ছিল না। বাংলাদেশ দলও কোনও ভুল করেনি। নিয়মের মধ্যে থেকেই কাজ করেছে তারা।
ক্রিকেটের আইন প্রণয়ন সংস্থাটি বলেছে, ‘নিয়মের উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, আগের আউটের দুই মিনিটের মধ্যে প্রথম বল খেলার জন্য নতুন ব্যাটারকে প্রস্তুত হতে হবে। মাঠে প্রবেশ করা বা উইকেটে থাকাও টাইমড আউট এড়ানোর জন্য যথেষ্ট নয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রথম বল খেলার অবস্থায় থাকতে হবে ব্যাটারকে।’
‘আম্পায়ারদের মনে হয়েছে, ম্যাথুজ দুই মিনিট সময়ের মধ্যে প্রথম বল মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। এরপর তার হেলমেটেও সমস্যা দেখা দেয়। যার ফলে আরও সময় নষ্ট হয়। ত্রিশ গজের বৃত্তে যেতেই ৯০ সেকেন্ড লেগে যায় ম্যাথুজের। তিনি হয়তো বুঝতে পেরেছেন সময়ের কথা। তাই বাকি পথ কিছুটা দৌড়েই যান। আগের উইকেট পড়ার ১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের মাথায় তার হেলমেটের সমস্যা দেখা দেয়। ওই মুহূর্তে তিনি গার্ড নেননি এবং বল খেলার জন্যও প্রস্তুত ছিলেন না।’
‘যখন হেলমেটে সমস্যা হলো, তখন আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলেননি ম্যাথুজ। সাধারণত নতুন সরঞ্জাম আনার ক্ষেত্রে তা করতে হয়। কিন্তু তিনি নতুন হেলমেটের জন্য সরাসরি ড্রেসিং রুমের দিকে ইশারা করেন। তিনি যদি আম্পায়ারকে বলতেন কী হয়েছে এবং সময় চাইতেন, তাহলে তারা (আম্পায়ার) হয়তো টাইমড-আউটের বিষয়টি এড়িয়ে হেলমেট পরিবর্তনের জন্য সময় দিতেন।’
টাইমড-আউট ক্রিকেটের চেতনা পরিপন্থী, এমন মন্তব্যও করেছেন অনেকে। তবে এমসিসি এটা মানতে নারাজ। জানিয়েছে, খেলা গতি বজায় রাখতে ও সময় নষ্ট এড়াতে ক্রিকেটে এই আইনের প্রয়োজন রয়েছে।
‘এই নিয়ম ছাড়া উইকেট পড়ার পর একজন ব্যাটার সময় অপচয় করতে পারেন। যখন দিনের আলো কমতে থাকে এবং ড্র সম্ভাব্য ফল হতে পারে, তখন এই সময় অপচয় একটি সমস্যা হতে পারে। এছাড়া সীমিত ওভারের ক্রিকেটে মন্থর ওভার রেটের কারণে ফিল্ডিং দলকে শাস্তির মুখেও পড়তে হয়। এমনকি ব্যাটসম্যানের ভাবনায় যদি সময় অপচয় নাও থাকে, তবু খেলাটির গতি ধরে রাখতে ও দুই উইকেটের মাঝে অহেতুক বিরতি এড়াতে টাইমড আউটের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’