মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একশতম ওয়ানডে আর সবমিলিয়ে দুইশতম ম্যাচ। মাইলফলকের দিনে ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই নির্বিষ থাকল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচের মতোই হল ব্যাটিং। তবে ইংল্যান্ড কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে উন্নতির ধারায় ঠিকই দেখাল ব্যাটিং দাপট। পরে পেস-স্পিনে ঝলক দেখিয়ে দাপুটে জয়ে এক ম্যাচ আগেই জিতে নিল সিরিজ।
শুক্রবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ১৩২ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। সোমবার চট্টগ্রামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি এখন নিয়মরক্ষার। যদিও হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর চ্যালেঞ্জ থেকে যাচ্ছে তামিম ইকবালের দলের।
টানা সাতটি হোম সিরিজে জয়ের পর হারের মুখ দেখল বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে সবশেষ সিরিজটিও স্বাগতিকরা হেরেছিল ইংলিশদের কাছেই। পরের সবকটি সিরিজ জিতে টাইগাররা হয়ে উঠেছিল অজেয়!
৩২৭ রানের বড় লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৯ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের জুটি কেবল হারের ব্যবধানই কিছুটা কমিয়েছে।
বাজে ব্যাটিংয়ের মহড়ায় ৪৪.৪ ওভারে ১৯৪ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদের মূল কাজ বোলিং হলেও শেষে ২১ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলে সংগ্রহ নিয়ে যান দুইশর কাছে।
টানা দুই বাউন্ডারি মেরে ফিফটি পূর্ণ করেছিলেন সাকিব। বড় ইনিংস খেলার আশা জাগিয়ে আলগা শটে আউট হয়ে ফিরে যান সাজঘরে। তামিম-সাকিব ৭৯ রানের জুটি গড়েন ঠিকই, আগ্রাসী ব্যাটিং করতে পারেননি। সাকিব চড়াও হওয়ার কিছুটা চেষ্টা করলেও তামিম খেলেন টেস্ট মেজাজে। ৬৫ বলে ৩৫ রান করে মঈনের টার্নিং ডেলিভারিতে এগিয়ে মারতে গিয়ে ওয়াইডিশ লং অনে ক্যাচ দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
সাকিবকে ফেরান আদিল রশিদ। লেগির বলে মিড অফে ক্যাচ দেন এ বাঁহাতি। ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন ৬৯ বলে। মারেন ৫টি চার।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩২, আফিফ হোসেন ২৩ রান করেন। ওপেনার লিটন দাস ও তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন। মুশফিকুর রহিম ফেরেন ৪ রান করে। দলীয় সংগ্রহ দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই ফেরেন তিন ব্যাটার।
শুরুতে জেসন রয়ের সেঞ্চুরির পথ ধরে অনেকটা আগায় ইংল্যান্ড। অধিনায়ক জস বাটলার শক্ত ভিত দিয়ে আউট হন। শেষে মঈন আলি ও স্যাম কারেনের ক্যামিওতে অনায়াসে তিনশ পেরিয়ে আরও কিছুদূরে যায় সফরকারীরা।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩২৬ রান তোলে ইংল্যান্ড। ২০১৫ সালের পর মিরপুরে কোনো দলের এটিই সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
ক্যারিয়ারের দ্বাদশ সেঞ্চুরি তোলার পর আরও কিছুক্ষণ উইকেটে কাটান রয়। ১২৪ বলে ১৩২ রানের ইনিংস খেলে আউট হন ইংলিশ ওপেনার। ১৮ চার ও এক ছয়ের ইনিংসটি ছিল নির্ভুল ব্যাটিংয়ের অপরূপ প্রদর্শনী।
৯৬ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে পথ দেখায় রয়-বাটলার জুটি। দলীয় সংগ্রহ দুইশ ছাড়ানোর পর সাকিব আল হাসান এলবিডব্লিউ করে রয়কে সাজঘরে পাঠায়ে ভাঙেন ১০৯ রানের জুটি।
পরের ওভারে উইল জ্যাকসকে (১) ফেরান তাসকিন আহমেদ। লড়াই চালিয়ে যান বাটলার। দলীয় সংগ্রহ আড়াইশ পেরিয়ে যাওয়ার পর আউট হন সফরকারী অধিনায়ক। ৬৪ বলে ৭৬ রান করেন ৫ চার ও দুই ছয়ে। ৩৫ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলে মঈন দলকে নিয়ে যান তিনশর কাছে।
শেষে স্যাম কারেন (১৯ বলে ৩৩) ও আদিল রশিদের (৫ বলে ৬) দারুণ ফিনিশিংয়ে সংগ্রহ আরও বড় করে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ডেভিড মালানকে ১৯ বলে ১১ রানে থাকার সময় ক্রিজছাড়া করেন মেহেদী হাসান মিরাজ, এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন এ বাঁহাতি। পরে জেমস ভিন্সকে ৫ রানে ফেরান তাইজুল ইসলাম। একশর আগেই তিন উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। সেই ধারা শেষপর্যন্ত ধরে রাখতে পারেননি টাইগার বোলাররা।