সুন্দরবন বাংলাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। বাংলাদেশ সরকার সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে অভয়ারণ্য এলাকা সম্প্রসারণের বিষয়ে একটি নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। ২০১৮ সালের ২৩ সেপ্টাম্বর ‘সুন্দরবন বন্যপ্রাণী বর্ধিত অভয়ারণ্য পায়’ শিরোনামে তা প্রকাশিত হয়। এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে, বিদ্যমান অভয়ারণ্যের সমষ্টিতে আরও এক লাখ ৭৮ হাজার ২৬০ হেক্টর যোগ করার ফলে বাংলাদেশের সুন্দরবনের অর্ধেকেরও বেশি এলাকা অভয়ারণ্যের মর্যাদা পেয়েছে।
অভয়ারণ্যের অধীনে পড়া অতিরিক্ত এক লাখ ৭৮ হাজার ২৬০ বিজোড় হেক্টরের মধ্যে ৯১ হাজার ৬৯৩ হেক্টর সুন্দরবন পূর্বে শরণখোলা রেঞ্জের অধীনে যুক্ত করা হয়েছে; খুলনা রেঞ্জের অধীনে সুন্দরবন দক্ষিণে ৩৮ হাজার ৩৩৯ হেক্টর এবং সাতক্ষীরা রেঞ্জের অধীনে সুন্দরবন পশ্চিমে মোট ৪৮ হাজার ২১৬ হেক্টর যোগ হয়েছে।
সরকার এই অভয়ারণ্য এলাকা থেকে সব ধরনের বনজ সম্পদ সংগ্রহ নিষিদ্ধ করেছে, যা সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী ও গাছসহ বনের জীববৈচিত্র্য বাড়াতে সাহায্য করছে।
সুন্দরবন এবং এর আশপাশে প্রায় চার মিলিয়ন মানুষ বাস করে, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই কৃষক বা জেলে এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আরও দু’মিলিয়ন মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই ম্যানগ্রোভ বনের উপর নির্ভরশীল। সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল বেশীরভাগ মানুষ দরিদ্র। দারিদ্র্য, শোষণ ও নিপীড়ন তাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই সম্পদ আহরণে তারা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়।
বনের উপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল লোকেরা হলো- বাওয়ালি (কাঠ কাটার), মাওয়ালি (মধু ও মোম সংগ্রহকারী) এবং জেলে।
বন থেকে সম্পদ ব্যবহারকারীদের সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হয় এবং সরকারী ফি দিতে হয়। তাছাড়া তারা প্রায়শই দাদনদার (মহাজনী) ব্যবস্থার শিকার হন।
বনের উপর নির্ভরশীল পরিবারের অনেক পুরুষ সদস্য বাঘের আক্রমনে মৃত্যু হয়েছে। সুন্দরবনে বাঘের দ্বারা মানুষ হত্যা স্থানীয় সম্প্রদায়ের দ্বারা নেতিবাচক মনোভাব এবং প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ডের দিকে পরিচালিত করে, যার ফলস্বরূপ বাঘের অস্তিত্বের সংখ্যার উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণে কত মানুষ মারা গেছে সেই সম্পর্কে এখনও নির্ভরযোগ্য মাইক্রো লেভেল তথ্যের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। যাইহোক, সরকারি রেকর্ড দেখায় যে গত ৬৩ বছরের ব্যবধানে সুন্দরবনে প্রায় এক হাজার ৩৯৬ জন মানুষের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে, যা প্রতি বছর গড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২২ জন। স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ এই সংখ্যা রেকর্ড করা সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি।
উদাহরণস্বরূপ, শ্যামনগর উপজেলার নীল ডুমুরকে একটি বাঘ-বিধবা গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বাঘ বিধবা (বাংলায়: বাঘ বিধোবা) হল- সেইসব নারী যাদের স্বামী বাঘের হাতে নিহত হয়েছে।
যদি কোনো বিবাহিত পুরুষ বাঘের পেটে চলে যায়, তখন বাড়িতে তার স্ত্রী-সন্তানের যে কী অবস্থা হয়, তা বলার মতো নয়। স্ত্রীর তখন সমাজে ঠাঁই হয় না। দুর্ভাগ্যের বিষয়, এ অবস্থায় মৃতের ছেলেমেয়েরাও থাকে কমবয়সি। ফলে ছোট ছোট সন্তান নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়ান বাঘ বিধবারা।
বেসরকারি একাট এনজিও’র হিসেব অনুযায়ী, সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত প্রায় এক হাজার ২০০ বাঘবিধবা নারী রয়েছেন, যারা প্রতিনিয়ত অভাব-অনটন আর সামাজিক বঞ্চনা নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এসব বাঘ-বিধবা নারী সাংসারিক কষ্টের পাশাপাশি মানসিকভাবে নিগৃহীত হচ্ছেন। প্রতিনিয়ত তাদের শুনতে হচ্ছে অপয়া, অলক্ষ্মী, ডাইনি ইত্যাদি নিপীড়নমূলক শব্দ। সুন্দরবনসংলগ্ন উপজেলা সাতক্ষীরা শ্যামনগর ও খুলনার কয়রা এলাকার বাঘ-বিধবাদের নিয়ে কাজ করছে এমন একটি সংস্থা হল দ্যা লিডার্স।
একাট’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও পাশের কয়রা উপজেলাতেই এক হাজার ১০০ জন বাঘ-বিধবা নারী রয়েছেন। এর মধ্যে ৩০০ জন বাঘ-বিধবা নারীর সহায়তায় কাজ করছে লিডার্স। এছাড়া শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ও গাবুরা ইউনিয়নে ১২০ এবং কয়রার বেতকাশি ইউনিয়নে ১৮০ জন।
বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বন্যপ্রাণী দ্বারা সৃষ্ট হতাহতের জন্য ক্ষতিপূরণনীতি প্রচলিত আছে। কিন্তু সেই ক্ষতিপূরণের পরিমাণ একটি পরিবারের পক্ষে তাদের একমাত্র পুরুষ উপার্জনকারী সদস্যের অনুপস্থিতিতে বসবাসের জন্য খুবই কম। তাছাড়া বাঘ-বিধবা পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য সরকার বা মানবিক সংস্থাগুলোর অন্যকোনও উদ্যোগ নেই, যদিও এই ধরনের মানুষদের আছে সাংবিধানিক অধিকার। মৃত্যু, অসুস্থতা বা প্রতিবন্ধী এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে দারিদ্র্যের কারণে জনসাধারণের সহায়তার মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগের ‘মৌলিক প্রয়োজনীয়তার বিধান’র অধীনে ১৫(ঘ) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে। সকল নাগরিকের মৌলিক প্রয়োজনীয়তা যেমন খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা এবং কাজ এবং কর্মসংস্থান, বিনোদন ও অবকাশের অধিকার ১৫(ক), ১৫(খ) এবং ১৫(গ) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বাঘ-বিধবারা সমস্ত মানবিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়, তাদের পরিবার এবং সম্প্রদায়ের দ্বারা বৈষম্যের শিকার হয়, দারিদ্র্যের গভীর মাত্রার কারণে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করে এবং আঘাত-পরবর্তী ক্ষত-বিক্ষত এবং বঞ্চনা, নির্যাতনের ভিড়ের সাথে জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়। সুন্দরবনের বাঘ-বিধবাদের কান্না আমাদের নীতিনির্ধারকেরা শুনবেন কি-না তা অনিশ্চিত এবং জল্পনা-কল্পনার বিষয়। তবে সুন্দরবনের আশপাশের গ্রামগুলোতে বাঘ বিধবাদের সংখ্যা নীরবে বেড়ে চলছে।
এসডিজি বা বৈশ্বিক লক্ষ্যসমূহ হলো ১৭টি আন্তঃসংযুক্ত বৈশ্বিক লক্ষ্যগুলোর সমন্বয়ে ‘সকলের জন্য একটি ভালো এবং আরও টেকসই ভবিষ্যৎ’ অর্জনের পরিকল্পনা হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। জাতিসংঘ লক্ষ্যগুলো প্রণয়ন করেছে এবং ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা’ হিসেবে লক্ষ্যগুলোকে প্রচার করেছে। এসব লক্ষ্য সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-কে প্রতিস্থাপন করেছে, যা ২০১৫ সালের শেষ নাগাদ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এসডিজি’র মেয়াদ ২০১৬ থেকে ২০৩০ সাল। এতে মোট ১৭টি অভীষ্ট, ১৬৯টি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা এবং ১৩৩টি নির্ধারক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে বিশ্বের ১৬৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০১তম। এসডিজির লক্ষ্য সর্বসাকুল্যে ১৭টি। এই ১৭টি এসডিজি হলো: দারিদ্র্য বিলোপ (এসডিজি ১); ক্ষুধা মুক্তি (এসডিজি ২); সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ (এসডিজি ৩); মানসম্মত শিক্ষা (এসডিজি ৪); লিঙ্গ সমতা (এসডিজি ৫); নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন (এসডিজি ৬); সাশ্রয়ী ও দূষণমুক্ত জ্বালানি (এসডিজি ৭); শোভন কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (এসডিজি ৮); শিল্প, উদ্ভাবন ও অবকাঠামো (এসডিজি ৯); অসমতার হ্রাস (এসডিজি ১০); টেকসই নগর ও জনপদ (এসডিজি ১১); পরিমিত ভোগ ও উৎপাদন (এসডিজি ১২); জলবায়ু কার্যক্রম (এসডিজি ১৩); জলজ জীবন (এসডিজি ১৪); স্থলজ জীবন (এসডিজি ১৫); শান্তি, ন্যায়বিচার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান (এসডিজি ১৬); অভীষ্ট অর্জনে অংশীদারিত্ব (এসডিজি ১৭)।
সুন্দরবনের উপকূলীয় অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বেশ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষের জীবন ও জীবিকা। খাবার পানির সংকটে স্থানীয়দের মধ্যে বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। জলবায়ু সংকট প্রকট হয়ে ওঠার সাথে সাথে এই বনাঞ্চলের ঝুঁকিও ক্রমে বাড়ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কয়েক ফুট উপরে এই বনভূমি। আর প্রায়ই ঘূর্ণিঝড় এসে আঘাত হানছে সুন্দরবনে। ফলে অন্যান্য মানুষের পাশাপাশি এই বাঘবিধবাদের জীবন ও জীবিকা আরও কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে।
বাঘ বিধবাদের ভোগান্তি ও বেঁচে থাকার চ্যালেঞ্জসহ আর্থ-সামাজিক ও জীবিকার চ্যালেঞ্জ এবং দারিদ্র্যের অবস্থাও বেশ আলোচিত একটি বিষয়। টেকসই কৌশল এবং উপযুক্ত জীবিকার জন্য মূল ধারার পলিসি ও প্রোগ্রামে এসকল বাঘ বিধবাদেরকে সম্পৃক্ত করার সময় এসেছে।
অন্যদিকে, টেকসই বিকল্প আয়ের জন্য প্রশাসনিক কৌশল এবং নীতি নির্দেশিকা এবং মানব ও বাঘ উভয়কে বাঁচাতে সমন্বিত অংশগ্রহণমূলক বন ব্যবস্থাপনার সাথে সংরক্ষণ নীতি প্রণয়ন করা দরকার। এর ফলে স্থানীয় জনগণ সচেতন হবে এবং বাঘ বিধবাদেরকে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মতো জীবনযাপনের একটি উপায় বাতলে দেওয়াও সহজতর হবে। এভাবে বাঘ-বিধবাদের সামাজিক দুর্দশা দূর হবে এবং মূলধারার ব্যবস্থার কারণে জীবন পরিচালনার বাধাগুলি হ্রাস পাবে।
এসডিজি লক্ষ্য ৫ এর মূল বিষয় হল লিঙ্গভিত্তিক সমতা অর্জন এবং সমস্ত নারীদের ক্ষমতায়ন। এছাড়া অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, লিঙ্গ ভিত্তি বৈষম্য দূরীকরণও এসডিজি লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি লক্ষ্য।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স অনুসারে বাংলাদেশের নারীর দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। সর্বোমোট, ১৪৯টি দেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ বর্তমানে পঞ্চম এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে সপ্তম স্থানে রয়েছে। তবে সামগ্রীকভাবে নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন করার লক্ষ্যে সকল নারীকে এই মিশন ভিশন বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। বর্তমানে সারাদেশে ৮ হাজারের অধিক ডিজিটাল সেন্টারগুলোয় প্রায় ১৬ হাজারের অধিক উদ্যোক্তা কাজ করছেন, যার অর্ধেকই রয়েছেন নারী উদ্যোক্তা। এছাড়াও নারীরা বিভিন্ন অনলাইন ও অফলাইনে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছে। এর মাধ্যমে এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমানিত যে, বাংলাদেশ সরকারের মিশন ও ভিশন বাস্তবায়নে নারীদের সম্পৃক্ততা বাড়ানো গেলে নারীর অংশগ্রহনের মাধ্যমে দেশ ও জাতি লাভবান হতে পারে, যা দেশমাতৃকার জন্য কল্যানকরও বটে।
রূপকল্প ২০২১ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় প্রণীত হয়েছে রূপকল্প-২০৪১। জাতীয় অর্থনীতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে অনুমোদিত হয়েছে ‘রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবে রূপায়ণ: বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’। রূপকল্প-২০৪১ এর ভিত্তিমূলে রয়েছে দু’টি। প্রধান অভীষ্ট- ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত দেশ, যেখানে আজকের মূল্যে মাথাপিছু আয় হবে ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলারেরও বেশি এবং যা হবে ডিজিটাল বিশ্বের সাথে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ। আর অন্যটি- বাংলাদেশ হবে সোনার বাংলা, যেখানে দারিদ্র্য হবে সুদূর অতীতের ঘটনা।
রূপকল্প-২০৪১ এর ‘উদ্দীপনাময় সূচনা’ হিসেবে ধারণ করা হয়েছে জাতির পিতার আজন্ম লালিত স্বপ্ন ‘দারিদ্র্য ও ক্ষুধা মুক্ত, দুর্নীতি ও শোষণহীন সমৃদ্ধ এক বাংলাদেশ গড়ে তোলা’কে।
এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে রোড টু স্মার্ট বাংলাদেশ ঘোষিত হয়েছে, যা এবারের নির্বাচনী ইশতেহারকে চরম মাত্রা দান করেছে। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথে পর্বতসম সমস্যা থাকলেও তা অলঙ্ঘনীয় নয়। চরম দারিদ্র সীমার নিচে বাস করা ভূমিহীন, প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গ, বেদে, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এরূপ প্রায় পৌনে দু’কোটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে মূলধারার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সংযুক্ত করাই হবে আগামী দিনের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ।
সঠিক পরিকল্পনা ও সকলের নিবেদিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে উন্নয়নের চরম শিখরে। রূপকল্প-২০৪১ অর্জনের পথে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের শেখ হাসিনা মডেল’ থাকবে এক অনন্য মানবিক সংযোজন হয়ে। এরই ধরাবাহিকতায় চরম দারিদ্র্যপীড়িত এসকল বাঘ বিধবাদেরকে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় শামিল করার জন্য, তাদের দুঃখ দুর্দশা লাঘব করার জন্য সামগ্রীকভাবে তাদেরকে মূলধারার পলিসিতে অন্তভূক্ত করা আশু প্রয়োজন।
এসকল নারীদের উন্নয়নে কাজ করতে পারলে ২০৩০ সালের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যেমন সম্ভবপর হবে ঠিক তেমনি ‘রূপকল্প-২০৪১’ ভিশন বাস্তবায়ন ও নারীর ক্ষমতায়নে এই ধরনের পদক্ষেপ অনেকবেশী সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ফলে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা, দারিদ্র্য মুক্ত মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)