কুমিল্লায় সিএনজিচালক মো. নাজমুল হাসান (১৪) কে পূর্বপরিকল্পিতভাবে জবাই করে হত্যার দায়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত।
বুধবার (৬ মার্চ) দুপুরবেলা কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা চতুর্থ আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন –কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কোরপাই গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে মো. সুমন মিয়া (২৬), মৃত আলম মিয়ার ছেলে মো. শিহাব মিয়া (২০) এবং একই উপজেলার নয় কামতা গ্রামের মৃত আমীর হোসেন এর ছেলে মো. সোহেল মিয়া (২৮)। এছাড়াও ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন, একই উপজেলার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে আবুল বাশার (৩৮)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৭ অক্টোবর বিকেলে মো. নাজমুল হাসান সিএনজি চালানোর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে ফিরে না আসায় অনেক খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে পরিবারের লোকজন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায়, নাজমুলকে জবাই করে সিএনজিটি নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে নিহতের বাবা কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলাধীন মধ্যমতলা গ্রামের মৃত আবিদ আলীর ছেলে মো. আবদুর রব (৪৮) বাদী হয়ে মো. সুমন মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামি করে বুড়িচং থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন। পরে আসামি সুমন মিয়া ও আবুল বাশারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে তারা ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারার বিধানমতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম ঘটনার তদন্তপূর্বক আসামি মো. সুমন মিয়া, শিহাব মিয়া, মো. সোহেল মিয়া ও আবুল বাশার -এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পরে ২০১৬ সালের ১০ অক্টোবর উল্লিখিত আসামিদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় অভিযোগ গঠন করে রাষ্ট্রপক্ষের ১৭ সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আসামি আবুল বাশার ও মো. সুমন মিয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আসামি মো. সুমন মিয়া, মো. শিহাব মিয়া ও মো. সোহেল মিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড এবং আসামি আবুল বাশার -এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।
রায় ঘোষণাকালে আসামি মো. সুমন মিয়া, মো. সোহেল মিয়া ও আবুল বাশার আদালত কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন এবং অপর আসামি মো. শিহাব মিয়া অনুপস্থিত ছিলেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি অ্যাডভোকেট মো. জাকির হোসেন বলেন, আমরা আশা করছি মহামান্য হাইকোর্ট এ রায় বহাল রেখে দ্রুত কার্যকর করবেন।
আসামি পক্ষে নিযুক্ত কৌশলী অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, রায়ে কপি হাতে পেয়ে শীঘ্রই উচ্চ আদালতে আপিল করবো।