ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি লাভ করেছে গোপালগঞ্জের রসগোল্লা। দেশের ২৯তম পণ্য হিসেবে গোপালগঞ্জের রসগোল্লা স্বীকৃতি পেলেও তা ৩০তম পণ্য হিসেবে জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গতকাল (১৩ ফেব্রুয়ারি) মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ব্রিফিংয়ে সভাপতিত্ব করেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম, তিনি গোপালগঞ্জের রসগোল্লা জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ জোবায়ের আহমেদ জানান,গত বছরের ২২ আগস্ট গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (ইডিসি) সহযোগিতায় গোপালগঞ্জের রসগোল্লাকে জিআই পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়।
তিনি বলেন, এরই ফলশ্রুতিতে, গত (৮ ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে গোপালগঞ্জের রসগোল্লা নিবন্ধনের জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩ এর ধারা ১২ অনুসারে জার্নালে প্রকাশ করা হয়। ফলে রসগোল্লা গোপালগঞ্জ জেলার প্রথম পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি লাভ করেছে।
জিআই হলো ভৌগলিক নির্দেশক চিহ্ন যা কোন পণ্যের একটি নির্দিষ্ট উৎপত্তিস্থলের কারণে এর খ্যাতি বা গুণাবলী নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত জিআইতে উৎপত্তিস্থলের নাম (শহর, অঞ্চল বা দেশ) অন্তর্ভুক্ত থাকে। কোন একটি দেশের মাটি, পানি, আবহাওয়া এবং ওই জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোন একটি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাহলে সেটিকে ওই অঞ্চল/দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
অর্থাৎ সেই পণ্য শুধু ওই এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও উৎপাদন করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের কোন পণ্য জিআই হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে আবেদন করতে হয়। আন্তর্জাতিকভাবে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
ইডিসির ট্রেজারার উম্মে সাহেরা এনিকা বলেন, আমি গোপালগঞ্জের রসগোল্লা নিয়ে কাজ করেছি। এটি এক প্রকার রসালো মিষ্টি। এটি খাঁটি ছানা আর চিনি দিয়ে তৈরি করা হয়। এতে ময়দার কোন ব্যবহার নেই। এই রসগোল্লা দেখতে সাদা ও গোলাকার আকৃতির হয়। গোপালগঞ্জের রসগোল্লায় মিষ্টির পরিমাণ খুবই কম। রস বা চিনির সিরা পাতলার কারণে গোপালগঞ্জের রসগোল্লার স্বাদ দেশের যে কোন অঞ্চলের রসগোল্লার চেয়ে ভিন্ন। খেতে সুস্বাদু।
এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ জোবায়ের আহমেদ, ইডিসির প্রেসিডেন্ট কাকলি তালুকদার, ইডিসির ট্রেজারার উম্মে সাহেরা এনিকা, ইডিসির পরিচালক (যোগাযোগ) পলাশ চন্দ্র শীল (প্রতাপ), সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মুন্না, মাহবুব হোসেন সারমাত, সুব্রত সাহা বাপী প্রমুখ। প্রেস ব্রিফিংয়ে গোপালগঞ্জে কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।