নানা অজুহাতে বিক্রেতারা আবারও বাড়িয়েছেন কাঁচা মরিচের দাম। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ৩২০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতাদের অভিযোগ, যথেষ্ট সরবরাহ থাকা সত্বেও আড়তদাররা বাড়তি দামের আশায় মরিচ বিক্রি করছেন না। কিন্তু পাশাপাশি দোকানে দামের পার্থক্য কেন? এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি কেউ।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজার, হাতিরপুল বাজার, রামপুরা বাজার, মিরপুর কালশি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি করছেন শাহাজাহান আলী। তিনি ২৫০ গ্রাম মরিচের দাম চাইছেন ১২৫ টাকা, কেজি ৫০০ টাকা। বাইরে ভ্যানে প্রতিকেজি ৩২০ টাকা বিক্রি হলেও তার কাছে বেশি কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন: আমি আজ ৭ কেজি মরিচ এনেছি। এর মধ্যে দেখেন দেড় কেজি পচা বের হয়েছে। বাইরে মরিচ বেশি বেচে ওদের পোষায়। কিন্তু আমি মরিচ আনি কম। আবার পচা থাকে, ৫০০’র নিচে বেচলে পোষাবে না।
হাতিরপুলে পাশাপাশি তিন দোকানে দেখা গেলো কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩২০, ৪০০ ও ৫০০ টাকা কেজি। এর কারণ কী? জানতে চাইলে বিক্রেতাদের নানা অজুহাত। কারও বেশি দামে কেনা, কারও মরিচ আনার পর পচা বের হয়েছে এরকম নানা অজুহাত। তবে কেউ ক্রয় রশিদ দেখালেন না। তাদের বক্তব্য আড়ত থেকে এখন রশিদ দেওয়া হচ্ছে না। রশিদ চাইলে মাল দিতে চায় না।
রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা কবির হোসেন বলেছেন: দাম বেশি হওয়ায় গতকাল বুধবার আমি মরিচ কিনিনি। এক পাল্লা (৫ কেজি) দাম নিয়েছে ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা। আজ পাল্লা কিনেছি ১৫০০ টাকায়। তাও দাম বেশি। বাধ্য হয়ে ২৫০ গ্রাম বিক্রি করছি ৪৪০ টাকায়। মরিচের দাম কমবে বলে মনে হয় না।
মিরপুর কালশি বাজারের বিক্রেতা হিরন মিয়া কাচা মরিচের দাম বেশি হওয়া প্রসঙ্গে বলেন: দেশি মরিচ ৩৫০ টাকা ও ভারতীয় ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। অভিযোগ করেন, আড়ত থেকে মরিচ ঠিকমতো দিচ্ছে না। আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে আড়তে মরিচ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে, কালকে বেশি দামে বিক্রি করবে বলে। অন্য সময় দুপুর ১টা পর্যন্ত বিক্রি করে।
মোহাম্মদপুর কাটাসুর নামার বাজারের সবজি বিক্রেতা ইদ্রিস মিয়া দাম বাড়ার কারণ বলছেন বড় পাইকার এবং সিন্ডিকেট। তার বক্তব্য: বড় বড় পাইকার ও সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। আমরা ছোট বিক্রেতা; আমাদের হাতে তো কিছু নেই। সরবরাহ কম, চাহিদা বেশি; তারপরও বৃষ্টি। যে কারণেই দাম বাড়তি।
চলতি মৌসুমে কাচা মরিচের দাম কমার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন খরার কারণে এ বছর মরিচের গাছ এবং ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে আবারও গাছগুলো তরতাজা হতে শুরু করেছে। ১০-১২ দিনের মধ্যে নতুন ফুলের মরিচ বাজারে আসা শুরু করবে। তখন দাম কিছুটা নাগালে আসবে।