বিধিমালার মাধ্যমে দীর্ঘ ৪৭ বছর ধরে পরিচালিত সঞ্চয়পত্র খাত আইনের আওতায় আসছে। নতুন ‘সঞ্চয়পত্র আইন’ পরিচালিত হবে ১১টি স্কিমে। নতুন আইনে গুরুত্ব পাচ্ছে পেনশনভোগী ও নারী ক্রেতারা। আইনের খসড়া এরই মধ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের জন্য খসড়াটি এখন অর্থমন্ত্রণালয়ে রয়েছে।
এরফলে ২০১৯ সাল থেকে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে চলে আসা ‘সমন্বিত সঞ্চয়পত্র নীতিমালা’ প্রণয়নের ধারণাটি বাতিল হচ্ছে। ‘সঞ্চয়পত্র আইন’ করার আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিলো ‘সমন্বিত সঞ্চয়পত্র নীতিমালা’ করার সিদ্ধান্ত হয়েছিলো। সেটি এগিয়ে ছিলোও বহুদূর। খসড়াটি চূড়ান্ত প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে ছিলো। আইন করার সিদ্ধান্তে ‘সমন্বিত সঞ্চয়পত্র নীতিমালা’ প্রণয়ন থেকে সরে আসা হলো।
জানা গেছে: এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের মুখ্য সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মনিম। সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে অনুষ্ঠিত এক সভায় জাতীয় সঞ্চয়পত্র পরিকল্পনার সমন্বিত নীতিমালার বিষয়টি উঠে আসে।
বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নীতিমালার পরিবর্তে নতুন করে সঞ্চয়পত্র আইন পাস করা হবে। কারণ সঞ্চয়পত্র নিয়ে কোনো আইন নেই। পরে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রের সমন্বিত নীতিমালা তৈরির সিদ্ধান্ত ছিল। এখন সমন্বিত নীতিমালা না করে কেন আইন প্রণয়নের কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।’ এ বিষয়ে পুনরায় যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী সভায় উপস্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।
সঞ্চয়পত্রের নতুন আইন প্রসঙ্গে সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তরের পরিচালক (আইন) মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম জানান: জাতীয় সঞ্চয় আইন নিয়ে কাজ চলছে। আইনের খসড়া প্রণয়ন করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে খসড়া আইন যাচাই-বাছাই করছে। সঞ্চয়পত্র আইন প্রণয়ন হলে আরও অনেক কিছু সেখানে পরিষ্কার ব্যাখ্যা থাকবে। এটি বর্তমান সঞ্চয়পত্র বিধিমালা থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী হবে।
গত ৪৭ বছরেও সঞ্চয়পত্র খাতে কোনো আইন করা হয়নি। এখন ১৯৭৭ সালের বিধিমালা এখন আইনে পরিণত হচ্ছে। এর ফলে নতুন সঞ্চয়পত্র আইন আরও স্পষ্ট থাকবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে: নতুন সঞ্চয়পত্র আইনে এই নারীদের আরও সম্পৃক্ত করতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া অবসরপ্রাপ্তরা যেনো সঞ্চয়পত্র কিনতে পারে সে সুযোগ থাকছে। অপরদিকে করপোরেট গ্রুপ, বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কিংবা ধনিক শ্রেণি যাতে এ খাতে অর্থ বিনিয়োগ করতে না পারে আইনে সে ধরনের শর্ত থাকছে।
আগামী বছর জুনের মধ্যে সঞ্চয়পত্রের বেচাকেনা ও মুনাফা প্রদান পুরোপুরি অনলাইন ভিত্তিক হবে। অটোমেশন হয়ে গেলে বিড়ম্বনা এড়াতে সঞ্চয়পত্র আইন বড় ভূমিকা রাখবে, থাকবে বিনিয়োগ গাইড লাইন। ইচ্ছে করলেই বড় ধরণের বিনিয়োগ করা যাবে না।