চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

৬৪০ টাকারও কমে গরুর মাংস পাওয়া যাবে

কমতে পারে দুধ-ডিমের দামও

পুষ্টি চাহিদা পূরণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের রমজানের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রমে নির্ধারিত দামেরও কমে ডিম, দুধ, মাংস রাজধানীবাসীর হাতে পৌঁছে দেওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। 

তৃতীয় মেয়াদের মতো চলছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিক্রয় কার্যক্রম। এবার প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯৪০ টাকা, ড্রেসড (চামড়া ছাড়া) ব্রয়লার প্রতি কেজি ৩৪০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ১০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। রোজা প্রথম কয়েকটি যাওয়ার পর এখনকার নির্ধারিত দাম কমে আসার আশাবাদ করছেন মন্ত্রী। আর সেটা না হলেও দাম বাড়বে না বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

তিনি বলেছেন: যারা অতিরিক্ত লাভ করতে চায়, তারা অতিরিক্ত মূল্য নেয়। দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিপণনে সরকার কোন লাভ করছে না, কোন ভর্তুকি দিচ্ছে না। কোন ভর্তুকি না দিয়ে রমজানে যে দামে সরকার বিক্রি করতে পারছে, সে দামে বিক্রি করার মত ব্যবসায়ীদেরও যৌক্তিক অবস্থা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে বিক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, মানুষ যেন তার সাধ্যের মধ্যে দুধ, ডিম ও মাংস কিনতে পারেন, সেজন্য সরকার ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রম চালু করেছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয সর্বপ্রথম করোনায় ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় ব্যবস্থা চালু করে খামারি ও ভোক্তাদের উপকার করেছে। অর্থনীতি সচল রেখেছে। যারা বিপণের সাথে বিভিন্নভাবে যুক্ত তাদের সহায়তা করেছে। সে ধারাবাহিকতায় রমজানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বিপণন কার্যক্রমের মন্ত্রণালয় নয়। এই মন্ত্রণালয় উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সহায়তাকারী। দাপ্তরিক ম্যান্ডেট না হলেও আমরা মানুষের উপকারার্থে এ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ঢাকার ২০টি স্থানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

মন্ত্রী আরো বলেন, এ বছর প্রাথমিকভাবে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯৪০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ৩৪০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যে বিক্রয় করা হবে। তবে আমরা যে দাম ধার্য করেছি এটা নির্ধারিত নয়। প্রাথমিকভাবে উৎপাদকদের সাথে বসে ডিমের দাম নির্ধারণে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি রমজানে পর্যায়ক্রমে আশা করি এটা আরো কমে আসবে। একইভাবে আমরা আশা করছি মাংসের দামও আরও কমে আসবে। অন্যান্য সামগ্রীর দামও পর্যায়ক্রমে কমে আসবে বলে আমরা আশা করছি। প্রতিদিনের অবস্থান অনুযায়ী এটি পরিবর্তিত হবে। তবে কোনভাবেই প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত মূল্যের উপরে যাবে না। আমরা চেষ্টা করব এ মূল্যের নিচে রেখে কিভাবে মানুষকে সাহায্য করা যায়।

তিনি আরো যোগ করেন, সাধারণ মানুষদের কথা বিবেচনা করে এবার দুধের আধা লিটারের ছোট প্যাকেট, অল্পপরিমাণ ডিম এবং আধা কেজির মাংসের প্যাকেট রাখা হবে যাতে একেবারে নিম্ন আয়ের মানুষও তার সাধ্যের ভেতর এসব পণ্য কিনতে পারেন। আমাদের লক্ষ্য সচ্ছল মানুষ নয়। যারা তুলনামূলকভাবে স্বল্প আয়ের মানুষ, তাদের পাশে শেখ হাসিনা সরকার দাঁড়াতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় রমজান মাসে মানুষকে সাহায্য করতে, তাদের কষ্ট লাঘব করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

শ ম রেজাউল করিম যোগ করেন, পৃথিবীর অনেক দেশে রমজানে মানুষ উদারচিত্তে মানুষকে সাহায্য করে, আর আমাদের কিছু অতি মুনাফালোভী ব্যক্তিরা রমজানে মানুষকে কষ্ট দেয়, ভেজাল দিতে চায়। এদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে। যেখানে অন্যায় হবে, যেখানে খারাপ খাবার সরবরাহ করা হবে, মানসম্মত পণ্যের পরিবর্তে ভেজাল দেওয়া হবে, যেখানে অতিরিক্ত দাম নেয়া হবে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।

আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, উৎপাদক ও বিপণনকারীদের মাঝখানে একটি মধ্যস্বত্বভোগী মহল কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রশাসন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে। উৎপাদনের সঙ্গে যুক্তিসঙ্গত লাভের বাইরে যারা অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছে, অতিরিক্ত মুনাফার জন্য মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট, ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষসহ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। আশা করি মানুষের সহনশীল মূল্যে এসব পণ্য বিপণনে আমরা সহযোগিতা করতে পারব।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন এবং ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স-বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হাসান। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুর রহিম।

উল্লেখ্য, দুধ, ডিম ও মাংসের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে রমজান মাসে জনসাধারণ যেন প্রাণিজ আমিষ ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারে সে লক্ষ্যে ব্যবসায়ী, উৎপাদনকারী ও সাপ্লাই চেইন সংশ্লিষ্ট সকলকে সাথে নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

Labaid
BSH
Bellow Post-Green View