ব্রিটিশ শাসিত ভারত বর্ষে (বর্তমান বাংলাদেশের বগুড়ায়) জন্মে ছিলেন এই কিংবদন্তী পরিচালক তরুণ মজুমদার। তার বাবা বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী। কেমিস্ট্রিরের ছাত্র হলেও সিনেমা তৈরির ঝোঁক ছিল তরুণ মজুমদারের জীবনের প্রথম থেকেই। শচীন মুখোপাধ্যায় আর দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে মিলে ‘যাত্রিক’ নামে একটি টিম তৈরি করে সিনেমা পরিচালনার কাজ শুরু করে ছিলেন তিনি।
পরে ‘যাত্রিক’ থেকে বেড়িয়ে নিজে পরিচালনার কাজ শুরু করেন তরুণ মজুমদার। মধ্যবিত্ত বাঙালির জীবন সিনেমার পর্দায় তুলে ধরেন ‘বালিকা বধূ’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘আপন আমার আপন’, ‘চাঁদের বাড়ি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘আলো’র মতো সিনেমার মাধ্যমে।
একাধিক জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তরুণ মজুমদার। তার ঝুলিতে দেশ বিদেশের খ্যাতি। পেয়েছেন পদ্মশ্রী সম্মানও। তার নির্মিত অনেকগুলো চলচ্চিত্রই সাহিত্য নির্ভর। সাহিত্যিক বিমল কর, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্যকীর্তি বড় পর্দায় তুলে ধরেছেন। তার সমসাময়িক অন্যান্য চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, তপন সিংহ প্রভৃতি পরিচালকদের মতো সমালোচকদের বিপুল সাড়া না পেলেও নিয়মিত ভাবে বক্স অফিস হিট ছবি নির্মাণ করে গেছেন। তাপস পালের মতো বহু অভিনেতা, অভিনেত্রীকে তিনি তুলে এনেছিলেন সিনেমার জগতে। উত্তম-সুচিত্রাকে নিয়ে যাত্রিক তৈরি করেছিলেন চাওয়া পাওয়া (১৯৫৯)। ১৯৬০-এ যাত্রিক-এর তৈরি ‘স্মৃতি টুকু থাক’-এ সুচিত্রার ছিল দ্বৈত ভূমিকা। ১৯৬৩-তে যাত্রিক আরও দু’টি হিট ছবি উপহার দেন – ‘পলাতক’ এবং ‘কাচের স্বর্গ’।