চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

‘মানুষের কথা কেয়ার করি না, জীবনটা উপভোগ করে যাচ্ছি’

জন্মদিনে অভিনেত্রী তমা মির্জা

এক যুগের ক্যারিয়ার চিত্রনায়িকা তমা মির্জার। অর্জন করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। মশলাদার বাণিজ্যিক ছবির পাশাপাশি গ্ল্যামারহীন চরিত্রে তমার দুর্দান্ত অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছেন দর্শক। বুধবার (১ জুন) এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। দিনটি কখনই জাঁকজমক ভাবে পালন করেন না বলে জানালেন তমা। তবে তিনি তার বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হন। জন্মদিনে ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে তমা মির্জার কথা হয় চ্যানেল আই অনলাইনের সাথে…

শুভ জন্মদিন। জীবনের বিশেষ দিনটি কীভাবে কাটাচ্ছেন?
রাত ১২টা ১ মিনিটে আমার দ্বিতীয় পরিবার ‘গান বাংলা’ টিভিতে কেট কেটেছি। ওখানে আমার আম্মু, ভাইসহ মিডিয়ার অনেকে ছিলেন। তার আগে আমার আরেক বোন ও আমার বন্ধু রায়হান রাফীর সঙ্গে কেক কেটেছি। পরিচালক হিসেবে রাফীর সঙ্গে কেট কাটিনি, বন্ধু হিসেবে কেট কেটেছি। রাতটা এভাবেই গেছে। এখন (দুপুর) বাসায় আছি। বিকেলের পর বের হবো। আমি কখনও ফাইভ স্টার হোটেলে জন্মদিন পালন করিনি। যা হয় আমার বন্ধুরা করে। ওরা আমাকে নানাভাবে সারপ্রাইজড করতে চায়। যতটুকু করে আমাকে খুশী করার জন্য করে।

নায়িকারা বয়স বলতে চান না! এ বছর আপনার কততম জন্মদিন?
আমি আসলে ওপেন বুক। ১৯৯৩ সালের এই দিনে আমি জন্ম গ্রহণ করি। সেই হিসেবে এ বছর আমার বয়স ২৯ বছর। বয়স আমার কাছে নিতান্তই একটা সংখ্য। কারও বয়স ৪০ হওয়ার পরেও যদি তাকে দেখতে ২৫ বছর বয়সী মনে হয় তাহলে অবশ্যই সেটা তার ক্রেডিট। এটাকে আমি সাধুবাদ জানাই।

ছোটবেলার জন্মদিনের কোনো স্মৃতি মনে পড়ে?
ওই স্মৃতিগুলো আসলে কখনও ভোলার নয়। ক্লাস এইটে পড়া পর্যন্ত কোনো বছর জন্মদিন পালন মিস হয় নাই। বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার কোয়াটারে থাকতাম। সেখানে সবাইকে দাওয়াত দিয়ে আব্বু-আম্মু অনেক বড় করে জন্মদিন করতো। আগে আমি আমার বন্ধুদের ডেকে নিয়ে জন্মদিন পালন করতাম, এখন আমার বন্ধুরা আমাকে ডেকে সারপ্রাইজড করতে চায়! আমার জীবনে স্মরণীয় জন্মদিন গেছে ২০১৭ সালে। ওই বছর মে-তে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার ক’দিন পরেই জন্মদিন ছিল। পুরস্কার প্রাপ্তি ও জন্মদিন দুটো একসাথে সেলিব্রেট করেছিলাম। চলচ্চিত্রে যাদের সঙ্গে কাজ করেছি সবাই এসেছিলেন। আর এবার আমি বুঝতে পারছি হয়তো আজ সন্ধ্যার পর আমার জন্য অনেক রকম সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে। লেটস সি…!

জীবন নিয়ে আপনার ফিলোসফি কী?
আনপ্রেডিক্টেবল! প্রতিদিনই ভাবী অযথা চিন্তা করবো না, ক’দিনই বা বাঁচবো! যা আছে তাই নিয়ে আনন্দে থাকি। ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় বা গোছাতে গোছাতে আমাদের জীবন চলে যায়। কিন্তু আমরা সেই সঞ্চয় সঠিক ব্যবহার করতে পারি না। আমার কাছে প্যাথেটিক এটা মনে হয়। সবার জীবনে এগুলো কমবেশি হয়। আমিও এর বাইরে না। কিন্তু সঞ্চয়ে বেশি মনোযোগ না দিয়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বর্তমানের সঙ্গে হ্যাপি থাকতে পছন্দ করি। অনেকেই বলে তমা দামি ব্যাগ, ড্রেস ইউজ করে!ব্যক্তিজীবনের আরও নানান দিক নিয়ে বলে থাকে। মানুষের কথা কেয়ার করি না, আমি আমার জীবনটা উপভোগ করে যাচ্ছি। তবে কিছু কিছু সময় মানুষের কথায় খারাপ লাগে; তাই বলে আমি আমার ভালোলাগাগুলো কখনও বিসর্জন দেই না।

নতুন করে আপনার ক্যারিয়ারে একটা টার্ন দেখা যাচ্ছে। এই পথচলাটা কেমন লাগছে?
এটা আমাকে অনেক স্ট্রেস দেয়। সামনে কী কাজ করবো, গল্প, চরিত্র থেকে এ টু জেড সবকিছু মাথায় নিয়ে চলতে হয়। এইগুলো নিজের মধ্যে তখনই বাড়তে থাকে যখন গ্রহণযোগ্যতা ও শুভাকাঙ্ক্ষী বাড়তে থাকে। আমি এসব নিয়ে কিছুটা প্রেশার ফিল করি আবার উপভোগ করি। এসবের কারণে নতুন নতুন স্ক্রিপ্ট ও গল্প আমার কাছে আসছে। জীবনটা এখন রুটিনে চলে এসেছে। হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। যে কাজটা করবো সেটা যেন মনে হয়, এটা ঠিক আমারই কাজ। একইসাথে কাজগুলো এভাবে করতে চাই, যে কাজে আমি ছাড়া যেন দ্বিতীয় কোনো অপশন থাকবে না। অনেক কাজ দেখে মনে হয়, এই চরিত্রের চেয়ে সে করতে বেটার হতো। কিন্তু আমি চাই, যেটা করবো সেটা দেখার পর আমি ছাড়া কারও কথা যেন মাথায় না আসে।

ওটিটির ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’ ও ‘৭ নাম্বার শুটিং ফ্লোর’ কাজ দুটি নিয়ে যতো প্রশংসা পেলেন, এমনটা কি অতীতের কাজগুলোতে পেয়েছিলেন?
আগে আমাকে নিয়ে আলোচনা না হলে তো ১২ বছর এই ইন্ডাস্ট্রিতে থাকতে পারতাম না। এখানে কত প্রতিযোগিতা কমবেশি সবাই জানে। যখন ‘ইভটিজিং’, ‘নদীজন’, ‘এক মন এক প্রাণ’, ‘মানিক রতন দুই ভাই’ করেছিলাম তখনও প্রশংসা পেয়েছিলাম। আসলে এখন যেহেতু সবকিছু আধুনিক এবং জিডিটাল; তাই মানুষ দ্রুত সবকিছু জানতে পারছে।

সামনে আপনার কী কী কাজ আসছে?
নতুন একটি ওয়েব ফিল্মের শুটিং করেছি। সহশিল্পী সোহেল মণ্ডল। এটি ওয়েব প্লাটফর্মের হয়ে কাজ করেছি। তার ঘোষণা আমার দিক থেকে দিতে পারছি না, কর্তৃপক্ষ দেবেন।