ইসলামিক রাষ্ট্রগুলোর সংগঠন ওআইসি (অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন) বলেছে, তালেবান সেদেশে নারী এবং তরুণীদের শিক্ষার অধিকার বন্ধে যে ধর্মের দোহাই দিচ্ছে তা কোনভাবেই সঠিক নয়।
ওআইসি তালেবানের প্রতি পরিষ্কারভাবে আহ্বান জানায়-তারা যেন নারীদের প্রতি লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য পরিহার করে। তারা যেন নারী এবং তরুণীদের শিক্ষার মৌলিক অধিকার রক্ষা করে। এবং তারা যেন নারীদের স্বাধীনভাবে চলাচল এবং কাজ করার অধিকার রক্ষা করে।
আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষার অধিকার রক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রে নারীদের প্রবেশের অধিকার নিশ্চিতে তালেবানের প্রতি ১১টি রাষ্ট্রের যৌথ বিবৃতির জবাবে তালেবান বলেছে, নারীদের উপর অহেতুক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমাদের ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা গুলো সবার বোঝা উচিত।
এদিকে আফগানিস্তানে নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তালেবান। একই সাথে নারীরা কোন বেসরকারি এনজিওতে কাজ করতে পারবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছে তারা।
তালেবানের এ ঘোষনার প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশটির নারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী এবং নারী অধিকার কর্মীরা। আফগানিস্তানের বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি সারাবিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তালেবানের এ ঘোষণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়।
আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ এবং সংস্থা তালেবানের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষার অধিকার রক্ষা এবং নারীদেরকে এনজিওতে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে তালেবানের প্রতি।
তালেবান শাসনামলে নারীদের এই অধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে তালেবান মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, নারীদের উপর অহেতুক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।
শনিবার তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ইসলামিক আইন লঙ্ঘন করে এমন কোন কাজ তারা করতে দেবেন না। এবং নারীদের অধিকারের ওপর বিধিনিষেধ সংক্রান্ত সমালোচনাগুলো দেশের প্রতিষ্ঠিত গোষ্ঠী এবং নিয়ম অনুসারে মোকাবেলা করা হবে।
তালেবানের এ প্রধান মুখপাত্র বলেন, ইসলামী আমিরাত দেশের সমস্ত বিষয়াবলী ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী পরিচালনা করার চেষ্টা করছে এবং বর্তমান সরকার দেশের মধ্যে কোন ধরণের ইসলামী আইন বিরোধী কাজকর্ম হতে দেবে না।
জাবিউল্লাহ মুজাহিদ আরো বলেন, আমরা আফগানিস্তানের সহযোগী রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই তারা যেন আমাদের ধর্মীয় বাধ্যবাধকতাগুলো বুঝেন এবং রাজনৈতিক কারণে আফগানিস্তানে মানবিক সাহায্য দেওয়া বন্ধ না রাখেন।
এর আগে ১৩ জানুয়ারি, ১১টি রাষ্ট্র একটি একক বিবৃতিতে তালেবান প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেছিল, তালেবান যেন আফগানিস্তানে নারীদেরকে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত না করে। এবং নারীদেরকে যেন স্বাধীন ভাবে কর্মক্ষেত্রে যেতে দেয়।
কিন্তু তালেবান প্রশাসন সেদেশে মেয়েদের শিক্ষা, চাকরি এবং নারীদের চলাফেরা সম্পর্কিত তাদের কঠোর নিয়মকানুন থেকে সরে আসার কোন লক্ষ্মণ প্রকাশ করেনি।